আদালতে যাওয়ার পথে সন্দেশখালির অভিযুক্ত শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সাক্ষীর গাড়িতে ধাক্কা ট্রাকের। সাক্ষী (witness) ভোলা ঘোষ বেঁচে গেলেও মৃত্যু হয়েছে তাঁর ছেলে ও গাড়ির চালকের। বেঁচে যাওয়ার পরে ব্যবসায়ী ভোলা ঘোষের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তাঁকে খুন করার ষড়যন্ত্র (conspiracy) করেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এমনকি যে ট্রাকটি ধাক্কা মেরেছে, সেই চালককেও চেনেন বলে দাবি, আহত ভোলা ঘোষের। আর এরপরেই রাজনীতির ময়দানে লাফিয়ে নেমে পড়েছে বিজেপির নেতারা। তবে পুলিশি তদন্তের আগে বিজেপির এই ধরনের বক্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন দাবি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের।
বুধবার সকালে সন্দেশখালির (Sandeshkhali) দিক থেকে বাসন্তী হাইওয়ে (Basanti Highway) ধরে বসিরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী ভোলা ঘোষ (Bhola Ghosh)। গাড়ির সামনের সিটে তিনি বসে ছিলেন। পিছনের সিটে ডানদিকে বসেছিলেন তাঁর ছোট ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ। গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক শাহানুর মোল্লা। বুধবার বসিরহাট আদালতে (Basirhat Court) একটি ধর্ষণের মামলায় হাজিরা দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ই উল্টোদিক থেকে আসা একটি ট্রাক (truck) বয়রামারি এলাকায় তাঁর গাড়িকে ডানদিক থেকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সত্যজিৎ ও শাহানুরের। গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৌলতে আহত হলেও বেঁচে যান ভোলা ঘোষ। গাড়িটি ধাক্কার চোটে পাশের নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে। ট্রাকের চালক পালিয়ে যায়।

আহত ভোলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে ন্যাজাট থানার পুলিশ। ভোলা দাবি করেন, গোটা ঘটনা পরিকল্পিত। শাহজাহান মামলার সাক্ষী হওয়ায় তাঁর উপর হুমকি আসছিল। সেই সূত্রেই বুধবারের প্রাণঘাতী হামলা। মালঞ্চ থেকে আসা ট্রাকটির চালকের সন্ধান করছে পুলিশ।

যেই ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে শাহজাহান শেখের, ওমনি ঘটনা ঘিরে রাজনীতি করা শুরু করেছে বিজেপি। দাবি করা হয়েছে, জেলের ভিতরে বসে শেখ শাহজাহান সাক্ষীকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে এই মামলার বিচার চলা সম্ভব না বলেও দাবি তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Sevendu Adhikari)।

আরও পড়ুন : ইন্ডিগো-র সিইও-কে এতদিনে তলব GDCA-র! মাঠে নেমে তদন্তে আধিকারিকরা

যদিও পাল্টা বিজেপির ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে সাক্ষী থেকে শুরু করে নিগৃহিতার খুনের ঘটনা তুলে ধরে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ উন্নাও, হাতরসের ঘটনা উল্লেখ করে দাবি করেন, যে কেউ রাজনৈতিক ফায়দার জন্য অভিযোগ করছে। পুলিশ তদন্ত করছে। কারো কাছে যদি কোনও তথ্য প্রমাণ থাকে, তদন্তকারীদের সাহায্য করবেন। তার আগে এই ধরনের বক্তব্য রাখা দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা। এই চরিত্রগুলি যেহেতু কোনও একটি মামলায় বিপরীতমুখী অবস্থানে একটা বন্ধনে যুক্ত হয়ে আছে, তাই একপক্ষের অভিযোগ বা সন্দেহ সামনে আসছে। যতক্ষণ না তার তথ্য প্রমাণ আসছে। বিষয়টা পুলিশের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। বিজেপি শাসিত রাজ্যে যখন একের পর এক অপকীর্তি হয়, তখন সেই মামলাগুলি অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয় না কেন।

–

–

–

–


