১০০ দিনের প্রকল্পের নাম ও প্রকল্পের একাধিক শর্ত বদল নিয়ে মঙ্গলবার সংসদে বিল পেশ হওয়ার কথা ছিল। নিয়মমতো সেই বিল পেশ হতেই বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল সংসদ (Parliament)। পুরোনো সংসদ ভবনের পিছনের অলিন্দের ছাদে উঠে নজির বিহীন বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদরা। বাংলার শাসক দল তৃণমূলের তরফের দাবি করা হয়, বিল (bill) নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে তার শর্তের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করতে বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে (select committee) পাঠানো হোক।
মঙ্গলবার বিকশিত ভারত জি রাম জি (VB G RAM G) নাম দিয়ে এমজিএনআরইজিএস-এর নাম বদলের বিল পেশ করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর নাম প্রকল্প থেকে মুছে ফেলার তীব্র প্রতিবাদ জানায় তৃণমূল। সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy) দাবি করেন, জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) নামকে জি রাম জি দিয়ে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছি। রামকে দেশের মানুষ শ্রদ্ধা করে। কিন্তু আমার মতে মহাত্মা গান্ধী অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। এমজিএনআরইজিএ-প্রকল্পের (MGNREGA) নামের এই বিকৃতির বিরোধিতা করি আমি।

শুধুমাত্র নাম নয়, নাম বদলের অজুহাতে যে শর্তের পরিবর্তন করেছে কেন্দ্র সরকার, তারও মুখোশ খুললেন সাংসদ সৌগত। তিনি স্পষ্ট জানান, এছাড়াও বিরোধিতার কারণ রয়েছে। এতদিন এটা ছিল একটা প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে তৈরি প্রকল্প। এবার এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে উৎপাদন নির্ভর একটি প্রকল্প। দ্বিতীয়ত, এখানে রাজ্যের (states) উপর মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে রাজ্যগুলির তহবিলে (state fund) বড় প্রভাব পড়বে। তাই আমি মনে করে এখন এই বিল নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে একে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো উচিত।

আরও পড়ুন : ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া-রাহুলের বিরুদ্ধে ইডির যুক্তিই শুনলই না আদালত

গোটা দেশ তথা কংগ্রেস দলের বড়সড় মানহানি হয় প্রকল্প থেকে মহাত্মা গান্ধীর নাম সরিয়ে ফেলার ঘটনায়। ফলে মঙ্গলবার লোকসভার আলোচনায় কংগ্রেসের তরফে বক্তব্য রাখেন সাংসদ শশী থারুর (Shashi Tharoor)। তিনি দাবি করেন, প্রকল্প থেকে জাতির জনকের নাম মুছে ফেলা কোনও প্রশাসনিক কারসাজি নয়। এটা একটি জাতির সামগ্রিক আত্মা এবং দার্শনিক ভিত্তির উপর চরম আঘাত। মহাত্মা গান্ধী যে রাম রাজ্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা কোনও রাজনৈতিক প্রকল্প ছিল না। সেটা গ্রামস্তর থেকে আর্থ-সামাজিক বিকাশের পথ ছিল। আর সেই দিক থেকেও নতুন বিলে যে কাঠামোগত পরিবর্তন তুলে ধরা হয়েছে, তাতে রাজ্যগুলির উপর চল্লিশ শতাংশ করে চাপ বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে কার্যত এই প্রকল্পটাই উঠে যাওয়ার মুখে দাঁড়াবে।

–

–

–

–

–


