ভারতের জনবহুল দেশে ক্রিকেট প্রতিভার অভাব নেই। অনেক প্রতিভা সঠিক ভাবে বিকশিত হয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে দেশকে গর্বিত করেন, অনেকেই আবার হারিয়ে যান সময়ের নিয়মেই। ইতিহাস নায়কদের মনে রাখে, কিন্তু নায়ক-সম্রাটদের আড়ালেই থেকে যান অনেক বর্ণময় চরিত্র। তাদেরই একজন ধ্রুব পাণ্ডোভ(Dhruv Pandove)।
১৯৮৩ সালে বিশ্বজয়ের মধ্যে দিয়েই ভারতীয় ক্রিকেটে রেনেশাঁ ঘটে।সেই দশকের শেষভাবে উত্থান ঘটে এক মারাঠো কিশোরের। যিনি তার পরের কয়েক দশক আলোকিত করেন ভারতীয় ক্রিকেটকে। সচিন রমেশ তেন্ডুলকরের সমসাময়িক অনেকেই ছিলেন মুম্বইয়ে। সতীর্থ বিনোদ কাম্বলি হারিয়ে গেলেন শৃঙ্খলার অভাবে, অমল মুজুমদারের ভারতীয় দলের জার্সি পড়াই হল ন। সেই সময়ে আরও একজন ঘরোয়া ক্রিকেটে উল্কার গতিতে উঠেছিলেন তিনি ধ্রুব পাণ্ডোভ(Dhruv Pandove)

মাত্র ১৩ বছর বয়সেই রঞ্জি অভিষেক, ১৪ বছর বয়সেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শতরান। কিন্তু হরিয়ানার বিস্ময় বালক ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশে ধ্রুবতারা হয়ে উঠতে পারেনি, অকালেই প্রাণ হারিয়ে চলে গেলেন বিস্মৃতির অতল আধারে। ভারতীয় ক্রিকেট অকালেই হারায় প্রতিভাবান ধ্রুবকে।

অনেকেই প্রতিভার দিক থেকে সচিনের সঙ্গে তুলনা করেন ধ্রুবকে। একটা সময়ে , প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে গড়ের দিক থেকে পান্ডোভ এবং তেন্ডুলকার প্রায় সমান ছিলেন, এবং অর্ধশতক এবং শতরানের দিক থেকে তারা সমান ছিলেন। তেন্ডুলকারের মতো, তিনিও লেগ-ব্রেক বল করতেন। প্রতিভার দিক থেকে তিনি কেবল সচিনের সমকক্ষই ছিলেন না, এমনকি তাঁর চেয়েও ভালো বলে দাবি করেন অনেকে।

১৯৭৪ সালে পঞ্জাবের পাতিয়ালাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ধ্রুব, তাঁর বাবা ছিলেন ক্রিকেটার।
পঞ্জাবের অনূর্ধ্ব-১৫ এবং অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে খবরে আসেন। ১৯৮৭-৮৮ বিজয় হাজারে ট্রফিতে জম্মু ও কাশ্মীরের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের বিপক্ষে ১৫৯ রান করে নজর কাড়েন। পান্ডোভ ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে ১৩ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেটে হিমাচলের বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচেই ৯৪ রান করেন। ১৯৮৮ সালে প্রথম শ্রেণির তৃতীয় ম্যাচে জম্মু কাশ্মীরের বিরুদ্ধে শতরান করেন।এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে, তিনি ১৪ বছর ২৯৪ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় এবং বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি করেন।

এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলে সুযোগ পান। ১৯৯১ সালে রঞ্জি ট্রফিতে সর্ব কনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ১০০০ রানের মাইলস্টোন স্পর্শ করেন। ১৯৯২ সালে ৩১ জানুয়ারি দেওধর ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনাল শেষে, পান্ডোভ সম্বলপুর থেকে তার শহর পাতিয়ালাতে যাচ্ছিলেন। গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ধ্রুব। সেই সঙ্গে ভারত হারায় এক তরুণ ক্রিকেট প্রতিভাকে।

–

–

–

–
–


