নদিয়ার হরিণঘাটায় উদ্বোধন হল ‘বাংলার ডেয়ারি’-র নতুন অত্যাধুনিক দুধ প্রক্রিয়াকরণ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন কেন্দ্রের। বৃহস্পতিবার বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ থেকে ভার্চুয়ালি এই প্ল্যান্টের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীন এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে রাজ্যের দুগ্ধশিল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির দাবি করছে নবান্ন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিণঘাটা ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা এই প্ল্যান্টে প্রাথমিক ভাবে দৈনিক ১ লক্ষ লিটার দুধ প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা রয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে তা বাড়িয়ে ২ লক্ষ লিটার পর্যন্ত করা যাবে। দুধের পাশাপাশি এখানে দৈনিক প্রায় ২০ হাজার কেজি দই, ২ হাজার কেজি পনির, ২ হাজার কেজি ঘি এবং ৫ হাজার লিটার লস্যি উৎপাদনের পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। সমস্ত পণ্যই ‘বাংলার ডেয়ারি’ ব্র্যান্ডে বাজারে আনা হবে।

প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ও নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে তৈরি এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে রাজ্যে উচ্চমানের দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির সাহায্যে বর্জ্য জল নিঃসরণ কমানো হয়েছে। পাশাপাশি জল ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী ব্যবস্থার ফলে উৎপাদন খরচ কমবে এবং বিপণনে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাওয়া যাবে বলে আশা দফতরের।

এই প্রকল্পের প্রভাব গ্রামীণ অর্থনীতিতেও পড়বে বলে দাবি প্রশাসনের। দুধ সংগ্রহ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং গোটা দুগ্ধ মূল্যশৃঙ্খলে আধুনিক ও শক্তি-দক্ষ প্রযুক্তির সংযোজনের ফলে কৃষক ও পশুপালকদের আয় ধাপে ধাপে বাড়বে বলে মনে করছেন আধিকারিকেরা।

মোট ৬৫ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি এই প্রকল্পে প্রায় ২ হাজার মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে। পরিবহণ, প্যাকেজিং ও বিপণন-সহ বিভিন্ন সহায়ক ক্ষেত্র মিলিয়ে প্রায় ৪৯ হাজার মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া এই প্ল্যান্ট দু’বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যেই চালু হল। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের ‘বাংলার ডেয়ারি’ ব্র্যান্ডের সূচনা হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে। রাজ্যের অধীন বিভিন্ন ডেয়ারি ইউনিটকে এক ছাতার তলায় এনে মানসম্মত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য বাজারজাত করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। নতুন এই প্ল্যান্ট চালু হওয়ায় রাজ্যের নিজস্ব দুগ্ধশিল্প আরও মজবুত ভিত পাবে বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল।

আরও পড়ুন – দিঘা-দার্জিলিংকে টেক্কা দিতে পর্যটনের নতুন ‘হটস্পট’ ঝাড়গ্রাম

_

_

_

_
_


