অপরিকল্পিত এসআইআরের (SIR)জন্য আর কত মৃত্যু দেখতে হবে, বিজেপি সরকারের নির্দেশে কাজ করা নির্বাচন কমিশনকে (ECI) প্রশ্ন করছে বাংলার মানুষ। ফের এক বুথ লেভেল অফিসারের (BLO) আত্মহত্যার খবর মিলেছে। কারণটা সেই একই , অত্যাধিক কাজের চাপ। এবার ঘটনাস্থল বাঁকুড়ার (Bankura) রানিবাঁধ বিধানসভার রাজাকাটা এলাকা। মৃতের নাম হারাধন মণ্ডল (Haradhan Mondal), তিনি রাজাকাটা মাঝেরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ক্লাসরুম থেকেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানে ছিল সুইসাইড নোট। সংশ্লিষ্ট নোটে শিক্ষক লিখে গিয়েছেন কাজের অত্যাধিক চাপের জেরে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা। রানিবাঁধ থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে।
SIR থেকে ডিটেনশন ক্যাম্পে! অনন্ত মহারাজ বিজেপি-বিরোধিতা করুন, দাবি তৃণমূলের

এসআইআর আতংকের জেরে কখনও সাধারণ নিরীহ মানুষ আত্মহত্যা করছেন আবার কখনো অত্যাধিক কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে বিএলওরা জীবন শেষ করে দিচ্ছেন। এরপরও টনক নড়ছে না নির্বাচন কমিশনের। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বারবার এই বিষয় নিয়ে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও বিজেপির নির্দেশে কাজ করা জ্ঞানেশ কুমারের টিম কোন কিছুতেই কর্ণপাত করছে না। এস আই আর প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল তাই তার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় প্রয়োজন। শুধুমাত্র বাংলার বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে তড়িঘড়ি করে দু মাসের মধ্যে এই কাজ করতে গিয়ে প্রত্যেকদিন একের পর এক মৃত্যুর খবর সামনে আসছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হারাধন বাঁকুড়ার রানিবাঁধ বিধানসভার ২০৬ নম্বর বুথে বিএলও-র দায়িত্ব পেয়েছিলেন। নিজের বুথের কিছু ভোটারের শুনানিতে ডাক পড়ে। সেই ভোটারদের নথিপত্র জোগাড়ের নাম করে রবিবার বেলা দশটা নাগাদ নিজের বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি। পরে পরিবারের লোকেরা স্কুলে পৌঁছে দেখেন ক্লাসরুমের সিলিং ফ্যানে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হারাধন। উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা, ‘আমি আর চাপ নিতে পারছি না। বিদায়। এই কাজের জন্য আমিই দায়ী। এর সঙ্গে অন্য কারও যোগ নেই।সব ঠিক করেও আমি ভুল করলাম। ক্ষমা কর আমাকে।‘


মৃতের ছেলে সোহম মণ্ডল জানিয়েছেন, এসআইআরের কাজের চাপ তাঁর বাবা আর নিতে পারছিলেন না। প্রত্যেকদিন নতুন নতুন নিয়ম হচ্ছে। আজকে এটা করতে বলা হচ্ছে কালকে আবার সেটার পরিবর্তে অন্য একটা কাজ দেওয়া হচ্ছে। কোনও সুস্থ মানুষের পক্ষে এভাবে পরিশ্রম করা সম্ভব নয়।কাজের চাপ নিতে না পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন হারাধন আর তার থেকে মুক্তি পেতে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল বাঁকুড়ায়।
–

–

–

–

–

–

–
–


