বৈঠকে গরহাজির, CBI-এর ডাক, বিজেপির সঙ্গে শোভনের সম্পর্কে চিড়?

● শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আপত্তি উড়িয়ে দেবশ্রী রায়কে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত না’কি প্রায় পাকা করে ফেলেছে বিজেপি !

● বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি না’কি সেভাবে পাত্তা দিচ্ছেনা !

● বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের বৈঠকে রাজ্য বিজেপি না’কি আমন্ত্রণই জানায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে !
● জেরা করার জন্য শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আগামী শনিবার নিজাম প্যালেস দফতরে CBI তলব করেছে। ফলে
শোভনের কারনেই ‘কুখ্যাত’ নারদ-কাণ্ডে জড়িয়ে গিয়েছে বিজেপি !

আর শেষের ‘ভয়’-ই পাচ্ছিলো বিজেপির একাংশ। যে ‘অস্ত্র’ তৃণমূল নিধন করার কাজে ব্যবহূত হচ্ছিলো, সেই অস্ত্র এবার বিজেপির বিরুদ্ধেই ব্যবহার করবে বিরোধীরা। এই
ঘটনাকে যে সহজভাবে নিতে পারবে না বিজেপির সিংহভাগ অংশ, তা ভালোভাবেই জানেন পরিনত বুদ্ধির শোভনবাবু। তাই শঙ্কায় আছেন, এবার কি আদৌ সে ভাবে গুরুত্ব পাবেন গেরুয়া-ব্রিগেডে ?

সব মিলিয়ে গেরুয়া শিবিরে কার্যত ব্রাত্য-ই শোভন চট্টোপাধ্যায়। হয় বিজেপি এখনই ঝেড়ে ফেলতে চাইছে শোভনকে। অথবা,এই ক’দিনেই বিজেপি সম্পর্কে শোভনের মোহভঙ্গ হচ্ছে।
মঙ্গলবারের বিজেপির রাজ্য কমিটির বর্ধিত বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি ঘিরে জল্পনা ছিলই। আর বুধবার নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত শোভনকে CBI নোটিশ পাঠানোর পর সেই জল্পনা বৃদ্ধি পেয়েছে শতগুন। রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা, তাহলে কি বিজেপিতে এখনই স্লগ-ওভার খেলছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র? বিজেপির সঙ্গে শোভনের সম্পর্ক এখনই প্রায় তলানিতে ঠেকে গিয়েছে। এ নিয়েই চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের ওই বৈঠকে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য ছাড়াও বিধায়ক এবং সাংসদদের ডাকা হয়েছিল। তৃণমূল থেকে যাওয়া বড় নেতা শোভনের অনুপস্থিতি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। কারন, নতুন দলে তাঁর ‘ওজন’ কতখানি, সেটা মাপার জন্য এ ধরনের বৈঠকের ভূমিকা শোভনের কাছে অনেকখানি। তাহলে সেই বৈঠকে গরহাজির থাকবেন কেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র? রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, যাঁরা এই রাজ্য স্তরের বৈঠকে ডাক পেয়েও যোগ দেননি, তাঁদের শো-কজ করা হবে। দিলীপবাবু বলেছেন,
শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আসেননি। ওদিকে, দিলীপ ঘোষের কথা উড়িয়ে শোভনের তরফে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য কোনো আমন্ত্রণ ‘তাঁর’ শোভনদা পাননি।
মাত্র গত 14 আগস্ট বিজেপিতে যোগ দেওয়া শোভনের সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব কি সত্যিই ক্রমশ বাড়ছে? ওদিকে আবার বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বিজেপির অন্দরে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর শোভনকে সংবর্ধনা দেয় বিজেপি। শোভন বড় নেতা। সংবর্ধনা দেওয়ার যোগ্য নেতা। কিন্তু রাজনীতির আঙ্গিনায় কে বৈশাখী? বিজেপির একাংশ এই প্রশ্ন তুলেছে। সেই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে শোভন-সখী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না-থাকায় অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা প্রথমে জানান বৈশাখী। পরে অবশ্য তাঁর মানভঞ্জন হয়।

কিন্তু বিজেপির অন্দরের প্রশ্ন, এভাবে প্রতি পদে বৈশাখীকে ‘তোয়াজ’ করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে শোভন চট্টোপাধ্যায় যদি বিজেপি ছেড়ে যেতে চান, চলে যান।

Previous articleডার্বির আগে জয় পেয়ে স্বস্তির হাওয়া বইছে ইস্ট-মোহন শিবিরে
Next articleফের দেবশ্রীর বোকামি, দিলীপের বাড়ির সামনে দীর্ঘ অপেক্ষা করে ফিরে গেলেন