ডার্বির আগে জয় পেয়ে স্বস্তির হাওয়া বইছে ইস্ট-মোহন শিবিরে

ইস্টবেঙ্গল – 3 (রালতে, কোলাডো – 2)

এরিয়ান – 0

মোহনবাগান – 2 (চামোরো, নাওরেম)

বিএসএস স্পোর্টিং – 1 (ওপোকু)

ডার্বির আগে জয় পাওয়ায় স্বস্তিতে বাংলার দুই প্রধান। একদিকে কল্যাণী স্টেডিয়াম ও আর একদিকে ইস্টবেঙ্গল মাঠ। সময়ও এক। কলকাতা লিগে দুই ভিন্ন ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। আলেসান্দ্রোর ছেলেদের প্রতিপক্ষ ছিল এরিয়ান ক্লাব, আর ভিকুনার ছেলেদের লড়াইটা ছিল বিএসএস স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে। কিন্তু বাবা-ছেলে কেউই ময়দানের দুই প্রধানের সামনে জয়ের মুখ দেখতে পারল না। কথা হচ্ছে বাবা রঘু নন্দী ও ছেলে রাজদীপ নন্দীকে নিয়ে।

একদিকে যখন শহর থেকে একটু দূরে কল্যাণী স্টেডিয়ামে সবুজ-মেরুন শিবিরের কাছে বাবার বিএসএস স্পোর্টিং মুখ থুবড়ে পড়েছিল, তখন ইস্টবেঙ্গলের ঘরের মাঠে ছেলের এরিয়ান ক্লাবও হারের মুখ দেখেছে।

কলকাতা লিগে বরাবরই কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবেই নিজেদের তুলে ধরে এরিয়ানের ছেলেরা। তাই কোনওভাবেই বিপক্ষ দলকে হালকাভাবে নেননি লাল-হলুদ স্পানিশ কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্ডেজ। রবিবার যুবভারতীতে বসতে চলেছে মরশুমের প্রথম ডার্বির আসর। তার আগে এরিয়ানের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলের এই জয় নিঃসন্দেহে ইস্টবেঙ্গলের ড্রেসিংরুমে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।

এদিন ম্যাচের শুরুতেই সেটপিস থেকে গোলের সুযোগ এসেছিল। যদিও তা কাজে লাগাতে পারেননি কোলাডো। প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি সুযোগ তৈরি হয়, কিন্তু তা কাজে লাগিয়ে গোলের মুখ দেখতে অসমর্থ থাকেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। অবশেষে প্রথমার্ধের শেষ লগ্নে ম্যাচের বয়স যখন 41 মিনিট, তখন ডান দিক থেকে ব্র্যান্ডনের পাস থেকে দুর্দান্ত গোল করে দলকে এগিয়ে দেন লালরিন্ডিকা রালতে। দ্বিতীয়ার্ধে দুটি অবিস্মরণীয় গোল করেন লাল-হলুদ বিদেশি কোলাডো। সব মিলিয়ে 3-0 গোলে দুরন্ত জয় পায় ইস্টবেঙ্গল। ডার্বির আগে ফরোয়ার্ড লাইনে ও মাঝমাঠে দারুণ বোঝাপড়া নিঃসন্দেহে স্বস্তি দিয়েছে কোচ আলেসান্দ্রোকে। তবে সামাদ-বিদ্যাসাগররা গোলের সুযোগ হাতছাড়া না করলে আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত ইস্টবেঙ্গল।

তবে শতবর্ষের মরশুমে পড়শি ক্লাব এরিয়ানকে বিরাট ব্যবধানে হারালেও বিএসএস স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে মোহনবাগান মাত্র 2-1 ব্যবধানে জয় পেয়েছে। তবে ডার্বির আগে এই জয় নিঃসন্দেহে বাগান শিবিরেও বাড়তি অক্সিজেন এনে দিয়েছে, তা বলাই যায়। এক সপ্তাহ হয়নি গোকুলামের কাছে হেরে ডুরান্ড কাপ হাতছাড়া করেছে মোহনবাগান। তাই হারের ক্ষত এখনও টাটকা। সেই ক্ষত নিয়ে বেপাড়ার মাঠে বিএসএফের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল মেরিনার্সরা। আর খেলতে নেমে রঘু নন্দীর ছেলেদের হারিয়ে ঘরোয়া লিগে জয় সরণিতে ফিরল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।

এদিন জোসেফ বেতিয়াকে শুরুতেই বসিয়ে ইস্টবেঙ্গল থেকে তুলে নেওয়া চুলোভাকে মাঠে নামিয়েছিলেন বাগান কোচ ভিকুনা। সবুজ-মেরুন জার্সিতে বেশ ভালই খেলেছেন সদ্য প্রাক্তন লাল-হলুদ তারকা। তবে তাঁর পা থেকে কোনও গোল আসেনি।

প্রথমার্ধের 29 মিনিটে গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড সালভা চামরো। তবে মাত্র তিন মিনিটের মাথায় অর্থাৎ 32 মিনিটে বিএসএসের হয়ে সেই গোল শোধ করেন উইলিয়াম ওপোকু। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয় ড্র দিয়ে। তবে সেই সমতা বেশিক্ষণ জিয়ে রাখেনি মোহনবাগান।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন নাওরেম সিং। বলা চলে এটি ছিল তাঁর জয়সূচক গোল। অবশেষে 2-1 গোলে জয় পায় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। সব মিলিয়ে দুটি আলাদা ম্যাচে বাংলার দুই প্রধানের এই জয় ডার্বির আগে এক আলাদা তাৎপর্য রাখে বলেই মনে করছে ফুটবলমহল। এখন ডার্বির দিন কোন দল জয়ের হাসি হাসে সেটাই দেখার।

Previous articleপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যা বললেন রাজ্যপাল ধনকর
Next articleবৈঠকে গরহাজির, CBI-এর ডাক, বিজেপির সঙ্গে শোভনের সম্পর্কে চিড়?