আমি তাঁদের দেখিনি, কিন্তু কমরেড বুদ্ধদেবকে দেখেছি

ছোটবেলায় শুনেছিলাম ভালো করতে না পারো, খারাপ চেয়ো না। একটা মানুষ সদিচ্ছায় রাজ্যটাকে সুষ্ঠ ভাবে গড়তে চেয়েছিলেন মাত্র। তৎকালীন ঘুণ ধরা দলীয় নীতি এবং মানুষের অবিশ্বাস তাকে সেটা করতে দেয়নি। কিন্তু বেকারের মুখে হাসি ফোটাতে চাওয়া এক মানুষের এই দশা!!! আসলে বেশি ভালো মানুষ রাজনীতির কাদায় হারিয়ে যান, ড্রিবল করতে করতে ইনসাইড ডজের বদলে আউট সাইড ডজ করে ফেললেই নষ্ট জীবন….. এখানেও বোধ হয় তাই। আসলে সব শহরই এক একটা গথাম, যেখানে অজান্তেই কিংবা ভীষণ প্রয়োজনে একজন ব্যাটম্যান লাগে… যে বুক দিয়ে আগলে রাখবে তার শহরকে। গণেশ গাইতোন্ডে পেরেছিল তার মুম্বাইকে বাঁচাতে, সুপারম্যান পেরেছিল তার মেট্রোপলিসকে বাঁচাতে….. কিন্তু থর, অসীম শক্তিশালী যুদ্ধের দেবতা, সে পারেনি এসগার্ড বাঁচাতে। কারণ সেই গৃহযুদ্ধ আর কুর্সি নিয়ে নিরন্তর লড়াই। এনার বোধ হয় বাংলাটা পড়ালেই ভালো হত, কিছু ভালো শিক্ষক উপহার পেত সমাজ। কোথাও গিয়ে মনে হয় ইনি বোধহয় Weber এর Charismatic Authority-র অন্যতম উদাহরণ।

আমি চে গুয়েভারা কে দেখিনি
কিন্তু তার চোখ আমাকে অন্য মানুষের কথা বলে।
আমি বিধান চন্দ্র রায়কে দেখিনি
কিন্তু তার বিচক্ষণতা আমাকে অন্য মানুষের কথা বলে।
আমি রাজীব গান্ধীকে দেখিনি
কিন্তু তার প্রত্যয় আমাকে অন্য মানুষের কথা বলে।

আমি জ্যোতি বসুকে দেখেছি শেষ শয্যায়
তার দৃঢ়তা আমাকে অন্য মানুষের কথা বলে।
আমি অনিল বিশ্বাসকে দেখেছি চিতায় আর অনিলায়নের অক্ষরে
কিন্তু তার স্তিতধী ভাব আমাকে অন্য মানুষের কথা বলে।
আমি সুভাষ চক্রবর্তী কে দেখেছি শেষ শয্যায় আর স্লোগানের ভাষায়
তার জনসংযোগ আমাকে অন্য মানুষের কথা বলে।

আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য কে দেখেছি….
ব্রিগেডের মাঠে একটা লাল নিশানের মত উজ্জ্বল
মহাকরণের অলিন্দে এগিয়ে চলা শুভ্র দৃঢ়তায়
ছাত্রযুবদের আশা আকাঙ্খায়….
আমি তাকে ছুঁয়ে দেখেছি…. একটা নির্বাসিত বিপ্লবের আগুনের মত স্থির।
একটা নিভে যাওয়া আগুন, যার নাকে অক্সিজেনের নল….গাড়িটা মাঠে ঢোকার সাথে সাথে আমি জনতাকে উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখেছি।

আমি আসলে ওনার চোখে একটা রাজ্য দেখেছি…. যা আমাকে সকলের কথা বলে।।

ভালো হয়ে উঠুন স্যার প্লিজ.…( আপনার কমরেড হওয়ার যোগ্যতা আমার নেই, তাই সে শব্দ ব্যবহার করলাম না।)

Previous articleমেয়ো রোডে তরতাজা ছাত্রছাত্রীর ভিড়, চাঙ্গা তৃণমূল
Next articleনারদ নিয়ে মুকুলকেও জেরা করল সিবিআই