বিজেপিতে নাকি অনুশাসন আছে, তাহলে নবাগতা বৈশাখীর প্রকাশ্যে দলবিরোধী মন্তব্যের পরও ব্যবস্থা নয় কেন?

ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে কি ভিন্ন ব্যবস্থা? নাকি শৃঙ্খলা আর অনুশাসনের কথাগুলো শুধুই ফাঁকা আওয়াজ? অথবা দলবদলুদের জন্য এখনই নিয়ম ব্যবহার করতে ভয় পাচ্ছে বিজেপি?

সবেমাত্র দিন পনেরো আগে সবান্ধবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। তার পর থেকেই তাঁর হয়ে এবং নিজের হয়ে শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় মিডিয়ায় বিজেপি সম্পর্কে এতরকম অভিযোগ জানিয়ে চলেছেন এবং বিজেপি নেতারাও তার প্রতিবাদ না করে উল্টে রাজনীতিতে এই নবাগতার মানভঞ্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাতে তো সন্দেহ হচ্ছে এই দলে আদৌ কি কোনও শৃঙ্খলা আছে? নাকি দলবদলুদের তোয়াজ করতে গিয়ে দলের ভাবমূর্তি বিসর্জন দিতেও অসুবিধা নেই বিজেপির? না হলে দল সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে দলীয় ফোরামে কথা বলার বদলে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে সংবাদমাধ্যমে বিজেপি সম্পর্কে বিষোদগার করছেন আবার তা হজম করে রাতে শোভন-বৈশাখীর বাড়ি গিয়েই বৈঠক করছেন অরবিন্দ মেনন, জয়প্রকাশ মজুমদার এবং তার দুদিন পর ফের বৈশাখী মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তাতে গোটা এপিসোডটা একটা কমিক রিলিফে পর্যবসিত হয়েছে। নারদবিদ্ধ এক নেতা আর তাঁর বান্ধবী যেভাবে বিজেপিতে ঢোকা ইস্তক তথাকথিত অনুশাসননির্ভর একটা দলকে নাকানিচোবানি খাওয়াচ্ছেন তা রাজ্যবাসী এবং বিশেষ করে তৃণমূলের কাছে হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বন্ধুপ্রেমে অন্ধ শোভনবাবু যেভাবে প্রতি মুহূর্তে বৈশাখীদেবীর মান-অপমান, সম্মান-অসম্মান, ভাললাগা-খারাপলাগা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন, তাল মেলাচ্ছেন এবং রিঅ্যাক্ট করছেন, সেই ঘোর কাটিয়ে এই মুহূর্তে বিজেপির হয়ে দৌড়ঝাঁপ করা তাঁর পক্ষে প্রায় দুঃসাধ্য বলা যায়। এই শোভনবাবুর কাছ থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি যদি তাঁর অতীতের সাংগঠনিক সক্রিয়তা আশা করে তাহলে তা বড় ভুল ছাড়া কিছু নয়।

বৈশাখী সর্বশেষ জানিয়েছেন, বিজেপি থেকে তাঁরা নিষ্কৃতি চান। এই দল তৃণমূলের জুতোয় পা গলিয়েছে। বিজেপিতে কাজ করা অসম্ভব। এই কথাগুলো বৈশাখী জনান্তিকে বা ঘনিষ্ঠমহলে বলেননি, বলেছেন সরবে, প্রকাশ্যে এবং টিভি চ্যানেলে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায়। যিনি দল থেকে নিষ্কৃতি চাইছেন, তিনি দলে পদত্যাগপত্র না পাঠিয়ে মিডিয়ায় বলছেন! তাহলে কি ধরে নিতে হবে এত কান্ডের পরও বিজেপি নেতারা তাঁকে নিষ্কৃতি দিচ্ছেন না বলেই তিনি মিডিয়ায় জানাচ্ছেন? এরপর বিজেপির যদি ন্যূনতম মানসম্মান থাকে, দলে যদি কিঞ্চিৎ অনুশাসন থাকে, তাহলে উচিত শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বৈশাখীকে বহিষ্কার করা।

Previous articleরবিপ্রাতে গলফ গ্রীন সেন্ট্রাল পার্কে মিলল অজ্ঞাতপরিচয় রক্তাক্ত যুবকের মৃতদেহ, চাঞ্চল্য এলাকায়
Next articleশৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে রাজ্য বিজেপি শো-কজ করছে শোভন-সখী বৈশাখীকে