বিভূতিভূষণ 125

আজ 12ই সেপ্টেম্বর, কথাশিল্পী বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন । 1984-এ এইদিনে কল্যানীর কাছে মূর্তিপুর গ্রামে মামারবাড়িতে জন্মে ছিলেন বিভূতিভূষণ।

আমার কিন্তু আজও পথের পাঁচালী দেখা হয়ে ওঠেনি । আমার পথের পাঁচালী নিজে থেকেই কল্পনার জগতে রং লাগিয়ে দেয় যখন তখন আমার বয়স দশ কি এগারো । ক্লাস ফোরে বা ফাইভে আমার পাঠ্য ছিল আম আঁটির ভেঁপু-র একটা ছোট্ট অংশ, তাও বাংলা গল্প সংকলনে। কিন্তু আমি বায়না ধরলাম পুরো পথের পাঁচালী আমার চাই । ওরম সংক্ষিপ্ত ভার্সান আমি পড়বো না। আমার মা বাবা আরো সরেস। আস্ত অপু ট্রলজিটাই দিয়ে দিল উপহারে । ফলে পড়ার দুপুর কখন যে খেলার দুপুরে বদলে গেল আবার কখন যে ভদ্রলোক আমার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেল বুঝতে পারলাম না । নাইনে যখন সত্যি আম আঁটির ভেঁপু পাঠ্য বই হয়ে এল ততদিনে আমার পানসি অক্রুর সংবাদ ছাড়িয়ে কাজলকে অবধি চিনতো। তাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে চোখের সামনে দিব্য তাদের কাজকর্ম দেখতে পেতাম ।


তবে বিভূতিভূষণের সঙ্গে প্রথম আলাপ ক্লাস টু থ্রিতে। জন্মদিন বা নতুন ক্লাসে উঠলে মা বাবা বই কিনে দিত। সেবার বইটা দিয়েছিল আরো একটা ক্লাসিকের সঙ্গে । বইটার নাম চাঁদের পাহাড় ।তারপর আমার ইট কাঠ চূণ সুড়কির শহরে কেঁচো দেখেও ব্ল্যাক মাম্বার বাচ্চা দেখা বা দিনে দুপুরে ভেবে নেওয়া যে হাতির পাল হয়তো হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে পড়েছে তার থ্রিল যে কি তা যারা ঐ অবস্থায় না পড়েছে তারা ঠিক বুঝতে পারবে না ।
আর এভাবেই আমার মত শত শত কিশোর মনে জন্ম নিয়েছিল আরো অপু, যার রচয়িতাও স্বয়ং বিভূতিভূষণ । তাই ছেলেবেলার জয় যাতে বুঁদ, এই বুড়োবেলায়ও যার পরিধি আমাকে স্নিগ্ধ করে তোলে, তার জন্যই তো লেখা যায়-

পথ হারালেন অপূর্ব যে জয় নামের এক দুর্বিপাকে ।।