Monday, May 19, 2025

শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবিতে বাম ছাত্র-যুবরা নজরকাড়া মিছিল করে দেখিয়ে দিয়েছে। সংগঠিত প্রচার, প্রস্তুতি, এই দুর্দিনের বাজারেও নবান্ন অভিযানে ব্যাপক ভিড়। নবান্নের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেবে না পুলিস, প্রশাসনও মিছিল রুখতে মরিয়া হবে, জানাই ছিল। মাত্র একদিন আগে মমতার উপস্থিতিতে তৃণমূলের এনআরসি- মিছিল নির্বিঘ্ন করতে রাস্তা সাজিয়ে দিয়েছিল এই পুলিস-প্রশাসন। একদিন পরেই তাদের দমন-পীড়নের দাঁত-নখ বেরিয়ে পড়ল! বিরোধীদের আন্দোলনেই পুলিসের যত সমস্যা। সেই মিছিল বেকার যুবকদের চাকরির ন্যায্য দাবি হলই বা। লাঠি, টিয়ার গ্যাস, জলকামান এমনকি আশেপাশের ছাদ থেকে কিছু মেরুদন্ডহীন কাপুরুষের মুখ লুকিয়ে ঢিল ছোঁড়া, তৃণমূল জমানায় এই কয়েক বছরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন আটকাতে যা যা হয় তারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে। তবু যাঁরা এই পুলিসি তৎপরতা আন্দাজ করেও, মার খাওয়ার, রক্তাক্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও রাস্তায় হাঁটলেন তাঁদের কুর্ণিশ। সত্যিই তাঁরা লড়াকু।

কিন্তু এসবের পরও একটা প্রশ্ন প্রতিবারই উঠছে। আর তা নিয়ে চর্চাও অব্যাহত। এই যে এত ভাল মিছিল হল, এত স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ, এখনও বামেরা ব্রিগেড ডাকলে উপচে পড়া ভিড়, কিন্তু ভোটটা যাচ্ছে কোথায়? যে কমরেড আজ রাজপথে পুলিসের হাতে রক্তাক্ত হলেন, সেই তিনিই তাঁর নিজের এলাকায় কতটা সংগঠিত করতে পারছেন? যাঁরা এখনও বামেদের পক্ষে লড়ে যাচ্ছেন, আওয়াজ তুলছেন, তাঁরা নির্বাচনে সত্যিই কি বামফ্রন্টকে ভোট দেন? নিশ্চয়ই নয়। তাহলে ভূমিধসের মত বামপন্থীদের ভোট শতাংশ লাফিয়ে লাফিয়ে কমত না! এর অর্থ, তৃণমূল বিরোধিতায় কট্টর এক বাম সমর্থকও তাঁর দলকে এখনই আবার বিকল্প শক্তি হিসাবে ভাবতে দ্বিধাগ্রস্ত। মিছিল উপচে গেলেও তৃণমূলকে হারাবার প্রশ্নে তাঁরাও কৌশলী। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা দূরের শত্রুর কথা না ভেবে কাছের শত্রুকে সরাতে তৎপর। তাই নেতারা যতই বলুন তৃণমূল-বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, কর্মী-সমর্থকরা এই সরলীকরণে ভুলছেন না। তাঁরা এখনও মনে করছেন বামেদের ভোট দেওয়া মানে এই বাজারে তৃণমূলেরই জেতার পথ প্রশস্ত করা। তার চেয়ে তৃণমূলকে হারাতে ‘শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’ নীতিই বরং বেশি কার্যকর।

 

Related articles

আন্দোলন হিংস্র কেন হবে: চাকরিহারা শিক্ষকদের জন্য রাজ্যের অবস্থান ব্যাখ্যা অভিষেকের

লাগাতার বিকাশ ভবন ঘেরাও করে আন্দোলনে চাকরিহারা শিক্ষকরা। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট থেকে সরকারি কর্মীদের শারীরিক নিগ্রহ, কোনও অভিযোগই...

প্রতিনিধি দলে কে, একক সিদ্ধান্ত বিজেপি নিতে পারে না: দলের অবস্থান স্পষ্ট অভিষেকের

পাকিস্তান বিরোধী প্রতিটি পদক্ষেপে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কেন্দ্রের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।...

ব্যারাকপুর, শেওড়াফুলি! জ্যোতির ভ্লগে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা

ট্রাভেল ব্লগারের নামে দেশের সেনার গোপণ তথ্য ফাঁস পাকিস্তানের গুপ্তচরদের কাছে। দেখলে মনেই হবে না কোনও তথ্য ফাঁস...

টিটাগড়ের বহুতলের ফাঁকা ঘরে বিস্ফোরণ! ঘটনাস্থলে পুলিশ

ফাঁকা বহুতলের ঘরে বিস্ফোরণে চাঞ্চল্য উত্তর চব্বিশ পরগণার টিটাগড়ে। বিস্ফোরণে ঘরের দেওয়ালের অংশ ভেঙে পাশের বাড়ির চালে গিয়ে...
Exit mobile version