অতি চালাকি করতে গিয়ে বড় বিপদে কার্যত ফেঁসেই গেলেন ফেরার পুলিশকর্তা রাজীব কুমার। আর ‘সাক্ষী’ নন, CBI এখন থেকে রাজীব কুমারকে সারদা-কাণ্ডের ‘অভিযুক্ত’ হিসাবেই চিহ্নিত করতে চলেছে। তদন্তকারী অফিসাররা এ সংক্রান্ত নথিও কার্যত তৈরি করে ফেলেছে।

CBI প্রথমদিন থেকেই রাজীবকে ‘সাক্ষী’ হিসাবে তলব করে আসছে। সারদা-মামলা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের উত্তর রাজীব দিতে পারবেন, এমন ভাবনাতেই CBI দফায় দফায় তলব করছে রাজ্যের ADG-CIDকে। কিন্তু এই মামলায় সাক্ষ্য দিতেও রাজি নন রাজীব। তাই প্রতিবারই নতুন অজুহাতে CBI-এর ডাক এড়াচ্ছেন তিনি। হাইকোর্টে তাঁর রক্ষাকবচ ইতিমধ্যেই প্রত্যাহূত হয়েছে। তার পরেও CBI কথা বলার জন্য ডেকেছে রাজীবকে। কিন্তু এবারও গরহাজির রাজীব কুমার। উল্টে গ্রেফতারির আশঙ্কা করে বারাসত কোর্টে আগাম জামিনের আর্জি জানিয়েছেন।

রাজীব কুমারের এই আগাম জামিনের আর্জি নিয়েই তৈরি হয়েছে আইনি জটিলতা। এক পদস্থ CBI কর্তা মঙ্গলবার সকালে প্রশ্ন তুলেছেন, রাজীব কুমার আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। যে মামলার ভিত্তিতে তিনি আগাম জামিন চেয়েছেন, সেই মামলাতেই CBI তাঁকে নিতান্তই ‘সাক্ষী’ হিসাবে দেখছে এবং সাক্ষী হিসাবেই তাঁকে তলব করা হয়েছে। কিন্তু কোনও সাক্ষী সেই মামলাতে আগাম জামিন প্রার্থনা করলে, তিনি আর ‘সাক্ষী’ থাকতে পারেন না। কারন সেই মামলাতে ওই সাক্ষী কোনও কারনে গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন।”
CBI-এর গুরুতর প্রশ্ন, “তাহলে রাজীব কুমার এই মামলা বা তদন্তে সাক্ষী হিসেবে থাকেন কী করে? একমাত্র অভিযুক্তই আগাম জামিন চাইতে পারেন”। সাক্ষী আবার গ্রেফতারির ভয় কেন পাবেন?
কোনও সাক্ষীকে অভিযুক্ত হিসাবে রূপান্তরিত করতে গেলে, নথি জোগাড় করতে হয়। CBI সূত্রের খবর, এমন নথি ফৌজি দ্রুততায় তৈরি করে ফেলেছে তদন্তকারীরা। হাইকোর্টের রায়ের পরেও CBI-এর ডাক উপেক্ষা করে ফেরার থাকা ও যোগাযোগ না করার যে ‘খেলা’ রাজীব চালাচ্ছেন, তাকেই CBI হাতিয়ার করছে। রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে CBI গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পথেও হাঁটতে পারে।
