রাত পোহালেই মহালয়া, পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ নিয়ে কিছু অজানা তথ্য

রাত পোহালেই মহালয়া। এক বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও মর্ত্যে ফিরছেন উমা। আর দেবীবন্দনার আয়োজনে মেতে উঠছে বাংলার শহর থেকে শহরতলী।

চিরাচরিত নিয়ম মেনে পিতৃপক্ষের অবসানে দেবীপক্ষের শুরুতে , পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণে অংশ নেন অনেকেই। এমন দিনেই কেন তর্পণ আয়োজন করা হয়। তর্পণ ঘিরে কয়েকটি তথ্য দেখে নেওয়া যাক।

হিন্দু শাস্ত্র কী বলছে?

হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, যেহেতু পিতৃপক্ষে প্রেতকর্ম (শ্রাদ্ধ), তর্পণ ইত্যাদি মৃত্যু-সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়, সেই হেতু এই পক্ষ শুভকার্যের জন্য প্রশস্ত নয়। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরবর্তী পূর্ণিমা (ভাদ্রপূর্ণিমা) তিথিতে এই পক্ষ সূচিত হয় এবং সমাপ্ত হয় সর্বপিতৃ অমাবস্যা, মহালয়া অমাবস্যা বা মহালয়া দিবসে। উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্রের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়।

পুরাণ কী বলছে ?

হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই লোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। পিতৃলোকের শাসক মৃত্যুদেবতা যম। তিনিই সদ্যমৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। পরবর্তী প্রজন্মের একজনের মৃত্যু হলে পূর্ববর্তী প্রজন্মের একজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন এবং পরমাত্মায় (ঈশ্বর) লীন হন এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ঊর্ধ্বে উঠে যান। এই কারণে, কেবলমাত্র জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন প্রজন্মেরই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়ে থাকে। এবং এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তর্পণের কিছু নিয়ম

তর্পণের জন্য প্রয়োজন , কবশ, কালো তিল। ছয়টি কূশ প্রথমে জলে ভিজিয়ে রেখে সেটা নরম হলে একত্রে তিনটি কূশ নিয়ে অনামিকা আঙুলে আংটির মতো ধারণ করে তর্পণ করবেন। বাঁ আঙুলেও একই ভাবে কূশাঙ্গরীয় ধারণ করবেন। কূশ ও তিল যদি না পাওয়া যায় তবে শুধু জলেই তর্পণ করতে পারেন।

মূলত তর্পণের ক’টি ধরণ?

শাস্ত্র মতে তর্পণ বহু ধরণের হয়। যেমন মনুষ্য তর্পণ, ঋষি তর্পণ, দিব্যপিতৃ তর্পণ, যম তর্পণ, পিতৃ তর্পণ। শাস্ত্র মতে বিভিন্ন মন্ত্র পাঠ করে এই তর্পণ প্রব সম্পন্ন করতে হয়।

Previous articleএবার মির্জার মুখোমুখি ম্যাথু?
Next articleকাল নিজামে যাচ্ছেন মুকুল