চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বরতলায় 400 বছর ধরে চটের পটচিত্রে দুর্গাপুজো হয়

প্রায় 400 বছরের বেশি সময় ধরে চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বরতলায় মূর্তিহীন পুজো হয়ে আসছে। বাদশাহী আমলের বণিক সেবকরাম পাল এই পুজো শুরু করেছিলেন। প্রয়াত বণিক সেবকরাম এলাহাবাদ থেকে নিয়ে এসেছিলেন বিশেষ ধরণের চটের পটচিত্র। সেই পটচিত্রেই দেবীর পুজো হত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই পটচিত্রের হদিশ আর মেলেনা। তবে পুরনো ঠাকুরদালানে এখন ফ্লেক্স করা দেবী দুর্গার সপরিবার চিত্রই পুডো হয়। তাতেই সনাতনী নিয়ম মেনে প্রতিবছর দুর্গাদেউলে সমবেত হয় পালপরিবারের উত্তর পুরুষরা।

আরও পড়ুন- মুকুলের ফ্ল্যাটেই টাকার লেনদেন! পুনর্নির্মাণের পর কার্যত নিশ্চিত সিবিআই
হুগলি নদীর পাড়ে অধুনা পালগলির সেবকরাম ভবনের পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানান লোককথা। ইতিহাস বলছে, আদি বর্ধমানের বাসিন্দা সেবকরাম ভাগ্যান্বেষণে এসেছিলেন হুগলি নদীর পাড়ে। সেখানেই এক সাধু একদিন গচ্ছিত করে দিয়ে যান অষ্টধাতুর রাধাকৃষ্ণ মূর্তি। অনটনের পরিবারে তখন মানুষের অন্ন জোটাই দায়। ফলে দেবমূর্তি থেকে যায় সিন্দুকে। তারপরেই আসে সেই স্বপ্নাদেশ। মন্দির গড়ে বসানো হয় রাধাকৃষ্ণ মূর্তি। কথিত, তারপরই হাল ফেরে সেবকরামের। ভাগ্যান্বেষী যুবক হয়ে উঠেন চর্চিত বণিক। চুঁচুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় গড়ে তোলেন স্থাবর সম্পদ।


পুরনো আমলের বিপুলকার পালবাড়ি শত শরিকে বিভক্ত হয়ে গেলেও সেই ইতিহাসের বর্ণময় স্বাক্ষর এখনও বহন করেছে দুর্গাপুজো। পাল পরিবারের বংশধর অনিলকুমার পাল বলেন, যেটুকু শুনেছি আমাদের কুলদেবতা ছাড়া মূর্তি পুজো করা যায় না। আর দুর্গা আমাদের কুলদেবতা নয়। তাই প্রথম থেকেই পটে পুজো হতো। বিরাট কাপড়ের সেই পট কালক্রমে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন ফ্লেক্সের উপরে মায়ের ছবি ছাপানো হয়েছে। মূল পুজো ঘটে হলেও সামনে দেবীর একটা ছবি না থাকলে মানসিক শান্তি হয় না। সেজন্যই মায়ের ছবির আয়োজন।