ভারতীয় ফুটবল মহল আঙুল উঁচিয়ে বলছে, দেখো আইএফএ। শেখো আইএফএ।

আইএফএ পরিচালিত ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান মুখোমুখি হলেই ভিনরাজ্যের রেফারি যুবভারতীর সবুজ গালিচায় নেমে পড়েন বাঁশি মুখে। আর ‘ব্রাত্য’ বাঙালি রেফারি প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় সুদূর ইরানে গিয়ে মাঠ দাপান। এরপরেও কবে বাংলার ফুটবল নিয়ামক সংস্থার চোখ খুলবে ঈশ্বরই হয়তো জানেন!

ঐতিহাসিক ম্যাচ তো বটেই। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচটিতে কাম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ১৪-০ ব্যবধানে জেতে ইরান। প্রি-ওয়ার্ল্ড কাপ ম্যাচে এত বড় ব্যবধানে জয়লাভ খুব একটা দেখা যায় না। তবে এই ইতিহাস ছাপিয়েও আরও এক সোনার ফ্রেমে সাজানো ছবি দেখে ফেলল ফুটবল দুনিয়া। ইরানে গোটা দেশ জুড়ে এ যেন মুক্তির মেজাজ। প্রায় ৪০ বছর পরে স্টেডিয়ামে হাজির থাকার সুযোগ পেলেন সে দেশের মহিলারা। সৌজন্যে – অবশ্যই ফিফা। কট্টরপন্থীদের কড়া চোখের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। তবে অবশেষে ইরানের মহিলা ফুটবলপ্রেমীদের মুখে হাসি ফোটানো নিঃসন্দেহে ফিফা-র সর্বকালের সাফল্যমালার শীর্ষে। ফিফা-র নির্দেশ মেনে ইরান ফুটবল ফেডারেশন সাড়ে তিন হাজার টিকিট শুধু মহিলাদের জন্যই বরাদ্দ করেছিল।

বৃহস্পতিবারের ঐতিহাসিক ম্যাচেই মাঠ জুড়ে দাপিয়ে বেড়ালেন বঙ্গসন্তান প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁশি মুখে, রেফারির দায়িত্বে। আরও এক বাঙালি অসিত সরকারকেও এই ম্যাচে পাওয়া গেল সহকারী রেফারি হিসেবে। বারাকপুরের প্রাঞ্জল আর সোদপুরের অসিত দেখে ফেললেন কট্টরপন্থীদের বেড়াজাল টপকে কীভাবে সাড়ে তিন হাজার মহিলা হেসে ওঠেন। মুখে-গালে পতাকার রং এঁকে কীভাবে “ই – রা – ন….. ই – রা – ন” ধ্বনিতে মাতিয়ে রাখেন গোটা স্টেডিয়াম।

সপ্তাহ খানেক আগের কথা। ইরানে অনুষ্ঠিত একটি ফুটবল ম্যাচে স্টেডিয়ামে ছেলেদের বেশে হাজির হয়েছিলেন এক মহিলা সমর্থক। কিন্তু ধরা পড়ে যান তিনি। চরম শাস্তি হতে পারে, এই আশঙ্কায় আদালতের বাইরে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে দেন তিনি। তারপর থেকেই ফিফা-র পদক্ষেপ শুরু। অবশেষে জিতল ফুটবল। জিতল ইরানি মহিলাদের ফুটবলপ্রেম।

ইতিহাস রচনার সোনালি বাস্তব ফুটবল দুনিয়াকে চিনিয়ে রাখল প্রাঞ্জল-অসিতদেরও।

ব্রাত্য বাঙালি, কাঁদবে ? না হাসবে ?

আরও পড়ুন-মোদি-শি ঘরোয়া বৈঠকে চিনের কাশ্মীর প্রশ্নে জল ঢালতে তৈরি ভারত
