Wednesday, August 27, 2025

শক্তির দেবীর মহিমা হয়তো এমনই! আকস্মিক ভাবেই মিলিয়ে দিলেন দুই প্রজন্মকে।

রামমোহন রায় রোড তরুণ সংঘের কালীপুজোর থিম ‘শতবর্ষে ইস্টবেঙ্গল’। দেবীর আরাধনা যখন শুরুর মুখে, তখনই প্রয়াত পল্টু দাসের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে পুজোপ্ৰাঙ্গনে হাজির ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। একটু দূরে তখন বসে এক অশীতিপর বৃদ্ধ। প্রাক্তন সাংসদ-সাংবাদিক কুণাল ঘোষ লাল-হলুদ শীর্ষকর্তাকে পরিচয় করালেন বৃদ্ধ মানুষটির সঙ্গে। বাকি দৃশ্য-কাহিনি আবেগের। শ্রদ্ধার। স্মৃতির সঙ্গে মিশে থাকে যে রোমাঞ্চকতা, সেই অমলিন প্রেমের।

ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চৌধুরীর নাতি সুজিত চৌধুরী এখন মানিকতলার রামমোহন রায় রোডের বাসিন্দা। বয়স চুরাশি ছুঁইছুঁই। জন্মলগ্নে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক হলে কী হবে, একরাশ অভিমান নিয়েই দিন কাটাচ্ছিলেন মানুষটি। প্রিয় লাল-হলুদ পীঠস্থান থেকে কখনও কোনওদিন যে কেউ যোগাযোগ করেননি। দাদু সুরেশ চৌধুরীর কথা মনে পড়ে ? প্রশ্নটি শেষ হতে দেননি সুজিত চৌধুরী। গড়গড় করে বলে যাচ্ছিলেন, “এখন অনেক কিছুই আর মাথায় রাখতে পারি না। তবে নিমতলা স্ট্রিটের বাড়িতে দাদুর সঙ্গেই থাকতাম। দাদু একদম বন্ধুর মতো ছিলেন। দাদুই আমাকে সাঁতার শিখিয়েছিলেন। সাইকেল চালানো শিখিয়েছিলেন।”

এক্কেবারে মোহনবাগানের ঘাঁটি বলতে যা বোঝায়, ঠিক সেখানেই এখন থাকেন সুজিত চৌধুরী। নিজের পাড়ায় এবার ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ নিয়ে পুজোর থিম শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৫২ সাল। অল্পের জন্য দর্শকদের ছোড়া ইটের আঘাত থেকে বেঁচেছিলেন সুজিত চৌধুরী। তারপর থেকে আর সশরীরে মাঠে যাননি। তবে এখনও লাল-হলুদের সাফল্যে উল্লসিত হয়ে ওঠেন। আর ব্যর্থতায় মন খারাপ হয় খুব। গল্পের ছলে নিজেই বলে ফেললেন, “ব্যোমকেশ বোসের খেলা খুব ভালো লাগত। তবে সর্বকালের প্রিয় ফুটবলার যদি বলতে হয়, দু’জনের নাম বলব। আপ্পারাও এবং ভেঙ্কটেশ। পরবর্তীতে টিভিতে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের খেলা অল্পবিস্তর দেখেছি। অসামান্য ডিফেন্স।”

তরুণ সংঘের পুজো-উদ্বোধনের সন্ধ্যায় আলাপ হয়েছিল সুকুমার সমাজপতি, সমরেশ চৌধুরীদের সঙ্গে। পরিচয় হয় সুজিত চৌধুরীর অতিপ্রিয় মনার সঙ্গেও। তবে দেবব্রত সরকারের সঙ্গে আলাপচারিতার পরেই এমন সম্মান মিলবে ভাবতে পারেননি তিনি। “সুরেশ চৌধুরীর নাতি এখানে থাকেন!” চোখটা চিকচিক করে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল শীর্ষকর্তার। কখনও হাত ধরে, কখনও করজোড়ে দেবব্রত সরকার ক্লাবে আমন্ত্রণ জানান সুজিত চৌধুরীকে।

সুরেশ চৌধুরীর স্মৃতি এখন আবছা সুজিত চৌধুরীর চোখে। তবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে পৌঁছে নতুন করে দাদুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে চান নাতি সুজিত চৌধুরী।

নাহলে কি আর এ কথা বলতে পারেন, “ক্লাবে গিয়ে সবার আগে দাদুর ছবিটা দেখতে চাই।”

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version