দুদিন নবমী পড়ায় বেজায় খুশি চন্দননগরবাসী

নবমী নিশি শেষ না হওয়ার প্রার্থনা করে সবাই। কিন্তু এই বছর চন্দননগরের বাসিন্দারা বলছেন চাপ নেই দ্বিতীয় নবমী আছে তো। তিথি নক্ষত্র অনুযায়ী এবছর দুদিন নবমী হওয়ায় শেষ হয়ে যাওয়ার দুঃখটা কিছুটা হলেও কম তাই প্রথম নবমীতে সকাল দুপুর সন্ধে রাত্রি তিন শহরের রাস্তা একবারের জন্যও ফাঁকা দেখায়নি। সময় যত গড়িয়েছে তত বেড়েছে মানুষের ভিড়। রেল সড়ক, জলপথে কাতারে কাতারে মানুষ এসেছেন এই শহরের আনাচে কানাচে।

চন্দননগর শহরের রাজপথে যেমন বড় বড় পুজো হয় তেমনই গলি রাস্তাও কোনো অংশে কম নয়। থিমের পুজোয় কিছুটা পিছিয়ে হলেও প্রতিযোগিতায় থাকতে চান তাঁরাও। এই শহরের বিনয় বাদল দীনেশ ক্লাবের এবারের থিম প্লাস্টিক বর্জন এবং তার পুনঃ ব্যবহার। পুরো মন্ডপটাই তৈরী হয়েছে প্লাস্টিকের বোতল, জার সহ প্লাস্টিক জাত সামগ্রী দিয়ে। প্লাস্টিকের জিনিস ফেলে দূষন না ছড়িয়ে কিভাবে আবার তা ব্যবহার করা যায় তাই মন্ডপের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন উদ্যোক্তারা।

অন্যদিকে ডুপ্লেক্স পট্টীর থিম প্লাস্টিক দূষন থেকে মুক্ত হয়ে সবুজের অভিযান। সবুজই পারে মানব জীবন সহ অন্য প্রানীদের রক্ষা করতে। সে স্থল, জল বা আকাশ সব যায়গাতেই সবুজ গাছ কিভাবে রক্ষা করছে তারই এক ছবি মণ্ডপের সর্বত্র।

সুখ সনাতন তলায় আবার জঙ্গল বা বন কীভাবে মানুষের এক প্রজাতিকে রক্ষা করছে তার ছবি। জনজাতি উপজাতির মানুষরা কিভাবে বনকে নিজেদের বাঁচার তাগিদে রক্ষা করে আবার পাল্টা বন ও তাদের কীভাবে বাঁচার রসদ দেয় তারই এক ছবি মণ্ডপ জুড়ে।

চন্দননগর পাদ্রিপাড়া জগদ্ধাত্রী পুজো এবার ছত্রিশ বছরে পা দিল। এবার এই পূজো মণ্ডপের থিম নতুন মুদ্রা ও পুরাতনী মুদ্রা। বিশেষ করে এই এলাকায় বাস করেন তিন সম্প্রদায়ের মানুষ। জগদ্ধাত্রী পুজোয় তিন সম্প্রদায়ের মানুষরা মিলেই করে আসছেন। হিন্দু, মুসলিম,খ্রিস্টান সব মানুষরা একসাথে মা জগদ্ধাত্রী র আরাধনায় ব্রতী হন। এখানে দীর্ঘ দিন আগে এক পাদ্রি সাহেব বসবাস করতেন, তাই থেকেই এই জায়গাটি পাদ্রিপাড়া বলে পরিচিত।

চন্দননগর গঞ্জ শিতলা তলা এবার পয়তাল্লিশ বছরে পদার্পণ করল। এবারের থিম জীবন যেখানে। সবুজ ছাড়া যে জীবন সম্ভব নয় যে কোনো জীবন যে সবুজের ছোঁয়াতে আসল রূপ পায় তাই তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে।

পরিবেশ দূষন রোধে গাছ থেকে উৎপাদিত দ্রব্য দিয়ে মণ্ডপ গড়ে চমক দিতে চেয়েছেন সুরের পুকুর বারোয়ারীর উদ্যোক্তারা। কারণ পুজো হয়ে গেলে প্যান্ডেলের অবশিষ্ট অংশ থেকেও দূষন ছড়ায়। কিন্তু এই বারোয়ারী প্যান্ডেল তৈরীতে ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন গাছের বীজ। যাতে পুজো শেষ হয়ে গেলে সেই বীজ যেখানে পড়বে সেখানেই একটা করে গাছের জন্ম হয়। যা অনেকাংশে রক্ষা করবে এই মানব জীবনকে।
প্রথম নবমীতে আলোর শহরে আলোয় স্নান করতে শহরের গলি রাজপথ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। উৎসব শেষে দ্বিতীয় নবমী যে সেই ভিড় কে আরোও কয়েকগুন বাড়িয়ে দেবে তা সহজেই কাম্য।

Previous articleআই লিগের উদ্বোধনী ম্যাচেই নামছে মোহনবাগান, ডার্বি ২২ ডিসেম্বর ও ১৫ মার্চ
Next articleশর্তসাপেক্ষে বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে শাহকে চিঠি দেবশ্রীর