‘ভালো-বাসা’ শূন্য করে নবনীতা আজ নোঙর ফেলছেন অন্য দ্বীপে

আমার নোঙর করা আছে অন্য ঘাটে

যেখান থেকে আমি আর ফিরব না…

আর কিছুক্ষণ পরেই শেষকৃত্য সাহিত্যিক নবনীতা দেব সেনের। হিন্দুস্তান পার্কের বাড়ি ‘ভালো-বাসা’য় তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এলেন রাজ্যপাল। এসেছেন সাহিত্যমণ্ডলী আর অসংখ্য গুনগ্রাহী। দূরভাষে প্রাক্তন সহধর্মিণীর প্রসঙ্গে বললেন, ৬৫ বছরের সম্পর্ক। কী করে ব্যাখ্যা করব। আমাদের যোগাযোগ ছিল। কথা হোত। শেষদিকে যখন কথা বলতে পারত না, তখন মেয়েদের (নন্দনা ও অন্তরা) মাধ্যমে খবর নিতাম। নবনীতা অসাধারণ প্রতিভাধর। ওর সাহিত্যরস, প্রজ্ঞা অন্যধরণের। যেতে পারলে ভাল হতো। আর নোবেলবিজয়ী পুত্রসম অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কলকাতায় গিয়ে দেখা করে এসেছিলাম। শরীরটা ক্রমশ বিশ্বাসঘাতকতা করছে বুঝতে পারছিলাম। কী বলব, মায়ের মতো। বড় হয়েছি ওনাদের ছত্রছায়ায়। আমার ব্যক্তিগত জীবনে বড় ক্ষতি।

সাহিত্যিক নরেন্দ্র দেব ও রাধারানি দেবের কন্যা নবনীতা। ১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জন্ম। প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, হার্ভাড, কেমব্রিজ হয়ে বাংলায়, যাদবপুরে শিক্ষকতা। গদ্য-প্রবন্ধ- কবিতায় অবাধ বিচরণ। লেখার মেজাজ ছিল ঘরোয়া আর ব্যতিক্রমী। ‘সঞ্চয়িতা’ ছিল তাঁর প্রাণের আরাম। মহাকাব্য নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ ছিল যুক্তিনির্ভর। ‘কাউন্টারপয়েন্টস’ বইটি তার উদাহরণ। ‘বামবোধিনী ও কয়েকটি উপন্যাস’, ‘আমি অনুপম’, ‘ট্রাকবাহনে ম্যাকমোহন’ সহ নানা লেখায় বিচিত্রগামী নবনীতার কথা ছড়িয়ে আছে।

হিন্দুস্তান পার্কের বাড়ি থেকে দেহ যাবে যাদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে বাংলা অ্যাকাডেমি হয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য।

Previous articleঅযোধ্যা রায়: সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠন ও সদস্যদের সতর্ক করল আরএসএস
Next articleবচ্চন-শাহরুখ সহ তারকার মেলা আজ চলচ্চিত্র উৎসবে