19 লক্ষ নাম বাদের ধাক্কায় এবার কি অসমের এনআরসি তালিকাই বাতিলের পথে? অমিত শাহের কথায় ইঙ্গিত

19 লক্ষ নাম বাদ। যার মধ্যে 13 লক্ষের বেশি হিন্দু। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তৈরি অসমের এই এনআরসি তালিকা প্রকাশ হতেই তীব্র ক্ষোভ জানান রাজ্যের বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা। চাপে পড়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। ভোটব্যাঙ্কে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত অসমের গোটা এনআরসি তালিকাই কার্যত বাতিল হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। রাজ্যসভায় সেই ইঙ্গিত দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, গোটা দেশের সঙ্গেই অসমে নতুন করে এনআরসি হবে। শাহর কথার সূত্র ধরে অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও বলেন, অসমে হওয়া এনআরসি পুরোপুরি বাতিল করে সারা দেশের সঙ্গে অসমেও নতুন করে এনআরসি হোক। ফলে ইঙ্গিত মিলছে যে অসমে ইতিমধ্যেই তৈরি হওয়া এনআরসি তালিকাটি বাতিলের পথেই হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র। আর যেহেতু এই তালিকা তৈরি হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, তাই আইন বাঁচিয়েই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে চায় সরকার, যাতে আদালত অবমাননার অভিযোগ না ওঠে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, অসমের এই তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তালিকা তৈরির পর কী হবে তা নিয়ে আদালতের কোনও নির্দেশ নেই। আইনের এই ফাঁক দেখিয়েই এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হওয়া এনআরসি বাতিল করতে চাইছে বিজেপি সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুক্তি হল, অসম চুক্তি অনুসারে এনআরসি তৈরির ভিত্তিবর্ষ ধরা হয়েছে 1971 সালের 24 মার্চ। কিন্তু ভবিষ্যতে দেশের সব রাজ্যে যখন এনআরসি শুরু হবে তখন তার ভিত্তিবর্ষ হবে আলাদা। মন্ত্রকের বক্তব্য, একই দেশে নাগরিকপঞ্জির দুটি আলাদা ভিত্তিবর্ষ হতে পারে না। তাই গোটা দেশে যে ভিত্তিবর্ষ ধরা হবে তার ভিত্তিতে অসমেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির নতুন তালিকা হবে। স্বাভাবিকভাবেই তখন আগের এই তালিকা বাতিল বলে ধরা হবে। অর্থাৎ অসমের এখনকার তালিকায় বাদ পড়া হিন্দু ও অন্য সম্প্রদায়ের সব মানুষই নতুন নাম তোলার সুযোগ পাবেন। এটা অনেকটা ‘সাপও মরল লাঠিও ভাঙল না’ গোছের ব্যাপার হবে।

সার্বিকভাবে বলা যায়, ছ’বছর ধরে 1600 কোটি টাকা খরচ করে অসংখ্য মানুষের আশঙ্কা, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা এমনকী মৃত্যুর বিনিময়ে তৈরি হওয়া অসম জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মূল্য কার্যত শূন্য। গোটা তালিকাটাই যদি পরে বাতিল হয় তাহলে খরচ হওয়া হাজার কোটি টাকা জলে গেল আর প্রচুর সময় ও পরিশ্রমের কুৎসিত অপচয় ঘটল বলা ছাড়া উপায় নেই। তাই কংগ্রেস এর সমালোচনায় বলছে, নোট বাতিল ও জিএসটির পর অসম এনআরসি বাতিল বিজেপির তুঘলকি শাসনের আরেকটি জ্বলন্ত উদাহরণ।

Previous articleবিজেপির বিরুদ্ধে ধিক্কার মিছিল
Next articleআজই কি মহাজট কাটছে মহারাষ্ট্রে