প্রশাসন নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পরই রাজ্যে আসতে শুরু করেছেন কাশ্মীরি শাল ব্যবসায়ীরা

শীতের মরশুম এলেই কাশ্মীরের শাল বিক্রেতারা চলে আসেন কলকাতা শহরে। তারপর সেখান থেকে শাল বিক্রেতারা বিভিন্ন শহর, শহরতলী ও জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েন। বছরের পর বছর ধরে তারাই রাজ্যে নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে ব্যবসা করে চলেছে। কিন্তু এবার কাশ্মীরের এই শাল ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপত্তা জোরদার করতে হয়েছে কলকাতা পুলিশ-সহ জেলা পুলিশকেও।

কাশ্মীরের কোনও শাল বিক্রেতা কলকাতা বা অন্য কোথাও যাতে লাঞ্ছিত বা অন্য কোনও সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য কলকাতা পুলিশ প্রতিটি থানায় নির্দেশিকা জারি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক কাশ্মীরি শাল বিক্রেতার নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের ওপর নজর রাখতে হবে, যাতে তাঁরা কোনও হামলার শিকার না হন। এসব শাল বিক্রেতা কোথায় থাকছেন, এর তালিকা-সহ ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শাল বিক্রেতাদের বলা হয়েছে, প্রয়োজনে নিকটবর্তী থানায় যোগাযোগ করতে।

কলকাতায় আসার পর বেশির ভাগ কাশ্মীরি ব্যবসায়ী বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। শাল, সোয়েটার, কার্পেট, জ্যাকেট, কার্ডিগান, স্কার্ফ, কম্বল-সহ বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্রের পসরা
নিয়ে আসেন তাঁরা। মূলত কিস্তি ও বাকিতেও ব্যবসা করে থাকেন এইসব শাল ব্যাপারীরা। শাল বিক্রি করে এপ্রিল-মে মাস নাগাদ মরশুম শেষে চলে যান নিজের রাজ্যে। তারপর আবার একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে এসে বাকি টাকা আদায় করেন। এভাবেই কলকাতা ও রাজ্যজুড়ে চলে কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ব্যবসা। সাধারণত দুর্গাপূজার পরই কলকাতায় আসতে শুরু করেন তাঁরা। অনেক ব্যবসায়ীর আবার স্থায়ী শালের দোকান রয়েছে কলকাতা শহরে। যদিও এবার তারা অনেক দেরিতে শহরে আসা শুরু করেছেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলা, কেন্দ্রের মোদি সরকারের কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা রদ, কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা থেকে বাদ দিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপ দেওয়ার পরও শুধুমাত্র রুটিরুজির তাগিদে শাল ব্যবসায়ীরা ছুটে এসেছেন এরাজ্যে। রাজ্যে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হওয়ার পরই তাঁরা ফের এখানে আসতে শুরু করেছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে পুলওয়ামা হামলার পর কলকাতার তিলজলা, বেহালা-সহ আরও কয়েকটি এলাকায় কাশ্মীরিরা হামলার শিকার হন। বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার লালবাজার আরও বেশি সজাগ হয়ে কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে।

Previous articleরাজ্যের তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর প্রতিক্রিয়া
Next articleআম্বেদকর মূর্তির তলায় বিরোধীদের সংবিধান বাঁচাওয়ের ডাক