অসমের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসিতে যেসব হিন্দুর নাম বাদ গিয়েছে তাদের দেশে থাকতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় মূলত সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই সংসদে দ্রুত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিএবি আনতে চায় কেন্দ্র। অর্থাৎ সিএবি সংসদে পাশ হলে এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর আইন হয়ে এলে এর সাহায্যেই নাম বাদ পড়া হিন্দুরা ভারতীয় নাগরিক বলে স্বীকৃতি পাবেন।
যেহেতু ২০২৪-এর মধ্যেই সারা দেশে এনআরসি লাগু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তাই অমুসলিম জনগণকে নাগরিকত্বের সুবিধা দিতেই বিজেপি সরকারের এই উদ্যোগ। এই কারণেই বিজেপি নেতারা বারবার প্রচার করছেন একজন হিন্দুরও আশঙ্কার কারণ নেই। গোটা দেশের সঙ্গে অসমে যখন এনআরসি করা হবে তখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হওয়া অসম এনআরসির বর্তমান তালিকার যে কোনও মূল্যই থাকবে তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিএবির মধ্যে যে শর্ত রাখা হয়েছে তাতেই স্পষ্ট, হিন্দু শরণার্থী হলেই সাতখুন মাপ। কোনও কাগজপত্রও দেখাতে হবে না। কিন্তু মুসলিমদের বেলায় সে যুক্তি খাটবে না। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান সহ কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র থেকে আসা হিন্দু, পার্শি, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে শরণার্থীর শংসাপত্র দিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু ওইসব দেশ থেকে আসা মুসলিমদের ক্ষেত্রে সে নিয়ম খাটবে না। উল্টে তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণে বহু কাঠখড় পোড়াতে হবে। কিন্তু সংবিধানে ঘোষিত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে নাগরিকত্ব প্রমাণে এরকম শর্ত রাখা যায় কীনা তা নিয়ে প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে। যদিও হিন্দু ভোটব্যাঙ্কের কাছে ‘বার্তা’ দিতেেই তড়িঘড়ি সিএবি পাশের উদ্যোগ কেন্দ্র সরকারের।