Monday, November 17, 2025

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বসেই রাজ্যকে তুলোধনা রাজ্যপালের

Date:

Share post:

তিনি আচার্য। তিনি রাজ্যপাল। অথচ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে গিয়ে কার্যত কোনও অভ্যর্থনাই পেলেন না জগদীপ ধনকড়। আর তা নিয়ে তিনি যে ক্ষুব্ধ সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বসেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।

বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেটের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো গত ২৯ নভেম্বর রাজভবনের সচিবালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।  ২০২ সেনেটের সদস্য সেখানে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য সেনেটের বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানিয়ে দেন আচার্য। কিন্তু হঠাৎই ৩ তারিখ একটি ছোট চিঠি মারফৎ রাজ্যপালকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে বৈঠকটি বাতিল হয়েছে। রাজ্যপাল বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এবং যেহেতু তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন, সেই মতো বুধবার আড়াইটে নাগাদ কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে পৌঁছে যান রাজ্যপাল। কিন্তু তাঁকে স্বাগত জানাতে সেখানে উপাচার্য তো দূর, কোনও বিভাগীয় প্রধানও উপস্থিত ছিলেন না। ছিলেন না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সেনেটের কোনও সদস্যও। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাধারণ কর্মী। আর প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরও কয়েকজন। সেখানে বিভিন্ন দাবির কথা উল্লেখ ছিল। কিছুক্ষণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ও বিভিন্ন ভবন ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। এরপরে সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। তারপরেই রাজ্যের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন আচার্য। তিনি জানান, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় কারও মোবাইলে যোগাযোগ করলে পাওয়া যায় না। ল্যান্ডলাইন কাজ করে না। আচার্য গেলে তাঁকে স্বাগত জানানোর মতো কেউ উপস্থিত থাকেন না। উল্টে ঘরের দরজায় তালা বন্ধ। চাবি উপাচার্যের কাছে। যার জেরে আমাকে বসে থাকতে হয়েছে ৮/৮ একটা ছোট ঘরে।” এরপরেই ধনকড় মনে করিয়ে দেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তিনি নিজে প্রোটকল না মানলেও, রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য-র পদ সম্মানীয়। সুতরাং এই ধরনের ব্যবহার তিনি প্রত্যাশা করেন না। এরপরই সুর ছড়িয়ে তিনি স্পষ্ট জানান, এই ব্যবহারের পালটা বিষয়টা হজম করতে হয়তো একটু অসুবিধেই হবে। কারও নাম না করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একইসঙ্গে রাজ্য সরকারকে জগদীপ ধনকড় কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

রাজ্যপালের এই মন্তব্য এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি রাজ্য মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য। তবে রাজ্যপালের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর উপস্থিতি এবং সেখানে বসেই তাঁর মন্তব্য ঘিরে ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে মত সব মহলের।

spot_img

Related articles

ঝাড়খণ্ডের দুমকায় বিধবাকে পুড়িয়ে খুন! প্রেমিক গ্রেফতার, পলাতক স্ত্রী

ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড! শিকারিপাড়া থানা এলাকার সীতাশাল গ্রামে তিন বছরের সম্পর্কে থাকার পর ২১ বছরের বিধবা...

অসাংবিধানিক মন্তব্য! রাজ্যপালকে ধুয়ে দিলেন কল্যাণ, দিলেন পাল্টা চ্যালেঞ্জ

চূড়ান্ত অসাংবিধানিক এবং কুরুচিকর মন্তব্য বিজেপির ‘দলদাস’ রাজ্যপাল বোসের! একজন রাজ্যপাল কীভাবে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন? শ্রীরামপুরের...

ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে শিক্ষক নিয়োগ, মঙ্গলবার শুরু এসএসসির ইন্টারভিউ 

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে প্রায় ২০ হাজার নামের প্রার্থী তালিকা। আগামীকাল, ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু...

অবাস্তব কাজের চাপ: বাংলার পর কেরল, আত্মঘাতী BLO, কাঠগড়ায় কমিশন

দেশের ১২ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এক অবাস্তব পদ্ধতিতে এসআইআর প্রক্রিয়া চালু করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (Election...