“এনআরসি ফাঁদ, সিএবি আরও বড় ফাঁদ”, লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক

এনআরসি ফাঁদ, সিএবি আরও বড় ফাঁদ। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশের দিনই লোকসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে এই মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার, এই বিল নিয়ে সকাল থেকেই সুর চড়ান বিরোধীরা। উত্তাল অধিবেশন কক্ষেই বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন বিকেল ভাষণ দিতে উঠে কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। অভিষেক স্পষ্ট জানান, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব হয় না। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করবে। এরপরই ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব বিল আনার বিষয়ে মোক্ষম প্রশ্নটি তোলেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে কি জিজ্ঞাসা করেন, চালক হিন্দু না মুসলিম? বাজার করতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, বিক্রেতা হিন্দু না মুসলিম? চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন তিনি হিন্দু না মুসলিম?”

তিনি বলেন, ১২৬ বছর আগে ভারতে সবার স্থান বলে মন্তব্য করেন স্বামী বিবেকানন্দ। হয় স্বামীজি যা বলেছিলেন সেটা ঠিক, নয়তো অমিত শাহ যা বলছেন সেটা ঠিক। তিনি জানান, তাঁর সংসদীয় এলাকা থেকে শুরু করে বাংলার বেশ কয়েকটি জায়গাতে এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন অনেকে। অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, সেই মৃত্যুর দায় কে নেবে?
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতি কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ অভিযোগ করেন, “৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সর্দার বল্লবভাই প্যাটেলের মূর্তি তৈরি হয়েছে, অথচ তাঁর নীতি-আদর্শ মানা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকার নতুন ভারতের কথা বলে আর হিংসায় বিশ্বাস করে। কিন্তু আমাদের ভারত শান্তি সম্প্রীতির কথা বলে।“
দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। তিনি এই বক্তব্য পেশের সময় বারবার বাধা দিতে যান বিজেপি সাংসদরা। তাঁদের অভিষেক তাঁদের স্পষ্ট জানান, বিরোধীদেরও নিজেদের কথা বলার অধিকার আছে।
অভিষেক অভিযোগ করেন, নোটবন্দি করে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের অর্থনীতিকে আইসিইউতে পাঠিয়ে দিয়েছে। গরিব আরও গরিব হয়েছে, ধনী আরও ধনী হয়েছে। এমন একজন মিলেনিয়রে নামও করা যাবে না, নোটবন্দির জন্য যিনি অসুবিধায় পড়েছেন।
দেশকে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় স্তোত্র, আজাদ হিন্দ ফৌজ দিয়েছে এ রাজ্য। আর সেই বাংলাকেই বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অভিষেকের মতে, কেন্দ্রের শাসকদলের অনেক সাংসদও ১৯৭১ সালের আগে তাঁদের ভারতে থাকার নথি দাখিল করতে পারবেন না।
রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে অভিষেক জানান, ডিটেনশন ক্যাম্পে যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১২ লাখ হিন্দু। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বাঙালি হিন্দু।
শেষের দিকে তাঁকে বারবার থামান স্পিকার। বিরোধী সাংসদরাও অভিষেককে বাধা দেন। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিরোধীদের মন্তব্য লোকসভায় নথিভুক্ত হয়নি বলে জানান ওম বিড়লা।

Previous articleমেয়েদের ‘নেতৃত্বের ক্ষমতা’-র কথা বলে মিস ইউনিভার্স দক্ষিণ আফ্রিকার সুন্দরী
Next articleবিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী! পরিচয় জানতে পড়ুন এই প্রতিবেদন