Monday, August 25, 2025

দুজনেই দুজনের অবস্থানে সঠিক। দুজনেই সত্যি কথা বলেছেন। দুজনের কথায় অন্তর্নিহিত কোনও বিরোধ নেই। একজন অন্যজনের বক্তব্য খারিজ করছেন, আপাতভাবে একথা মনে হলেও তার মধ্যে কোনও সারবত্তা নেই।

রবিবার রামলীলায় এনআরসি-গুজবের তত্ত্ব সামনে এনে খোদ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে বিষয় নিয়ে সরকারে কখনও কোনও আলোচনাই হয়নি তা নিয়ে মিথ্যা প্রচার করে সরকারের বদনাম করতে চাইছে বিরোধী দলগুলি ও শহুরে নকশালরা। এরপরই বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন ওঠে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও কি এই দলে !পড়েন? তিনিও কি তাহলে এনআরসি নিয়ে এতদিন মিথ্যে প্রচার করছিলেন? প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে নিজের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যই কি খারিজ করলেন নরেন্দ্র মোদি? যদিও এরপর এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতপার্থক্যর জল্পনা নস্যাৎ করে বিজেপির এক সর্বভারতীয় মুখপাত্র অপূর্ব যুক্তি তুলে ধরেন, যা থেকে স্পষ্ট ভবিষ্যতে এনআরসি হবে না এমন কোনও প্রতিশ্রুতি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও দেননি। তিনি শুধু বলেছেন এই মুহূর্তের কথা। অর্থাৎ এখন এনআরসি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কোনও পদক্ষেপ হয়নি।

বিজেপি মুখপাত্রের কথায়, নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ দুজনেই ঠিক বলেছেন। দুজনের কথার মধ্যে পরস্পরবিরোধিতাও নেই। কিন্তু কীভাবে? এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী একবারও স্পষ্টভাবে এই ঘোষণা করেননি যে দেশজুড়ে এনআরসি করা হবে না। তিনি যা বলেছেন তা টেকনিক্যালি একদম ঠিক। অর্থাৎ দেশজুড়ে এনআরসি করার বিষয়ে সরকারি স্তরে কোনও প্রস্তুতি বা আলোচনা শুরুই হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সরকারের অবস্থান জানিয়ে যে কথা বলেছেন তা নিয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। কারণ রাজনৈতিক স্তরে কোনও আলোচনা-বিতর্ক আর সরকারের মধ্যে কোনও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু এক বিষয় নয়। আবার উল্টোদিকে অমিত শাহ যা বলেছেন তাও ঠিক। কারণ বেআইনি অনুপ্রবেশ ইস্যুতে এনআরসি চালুর ঘোষণাটি বিজেপির ম্যানিফেস্টোতেই উল্লিখিত। এটি বিজেপি দলের ঘোষিত কর্মসূচি। নির্বাচনের আগে এটি তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে অন্যতম। ফলে বিজেপি সভাপতি হিসাবে অমিত শাহ ম্যানিফেস্টোতে দেওয়া লক্ষ্য পূরণের প্রতিজ্ঞা করতেই পারেন। এক্ষেত্রে দল লক্ষ্য পূরণের জন্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করতেই পারে। আবার এটাও লক্ষণীয়, সরকারের শীর্ষ পদাধিকারী নরেন্দ্র মোদি কিন্তু তাঁর দল বিজেপির এনআরসির দাবিকে খারিজ করে দেননি। দলীয় ম্যানিফেস্টোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনি উচ্চবাচ্যও করেননি। তিনি তাঁর অসাধারণ বাকচাতুর্য ও আবেগের মোড়কে বিরোধীদের অতীত অবস্থানের ফারাক দেখিয়ে এনআরসি উত্তেজনায় জল ঢালতে চেয়েছেন মাত্র।

তাহলে এনআরসি নিয়ে শেষমেশ কী দাঁড়ালো? সরকার জল মেপে বুঝেছে দেশের পরিস্থিতি এখনও এটি চালু করার পক্ষে উপযুক্ত নয়। অর্থাৎ সঠিক সময় আসেনি। আপাতত এখন তাই টাইমিং-এর অপেক্ষায় থাকবেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ।

Related articles

কালা কানুনের বিরাট সওয়াল শাহর, জীবনে কার্যকর হবে না, কটাক্ষ কুণালের

দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় না কি বিরাট পরিবর্তন আনছেন মোদি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীও জেলে গেলে পদ খোয়াবেন। আবার...

1+1=3: সুখবর শোনালেন পরিণীতি-রাঘব

বিয়ের পর থেকেই পরিণীতির (Pariniti Chopra) প্রেগনেন্সি নিয়ে নানা গুজব ছড়ায়। কখনও নায়িকার পোশাক বা কখনও স্বামী রাজনীতিবিদ...

কৃষ্ণনগরে বাড়ির দোতলায় উঠে প্রথমবর্ষের কলেজ ছাত্রীকে গুলি করে খুন!

বাড়ির দোতলায় উঠে প্রথমবর্ষের কলেজ ছাত্রীকে (College Student) গুলি (Fire) করে খুন। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য কৃষ্ণনগরে। সোমবার, দুপুর...

Petrol Diesel price: গোটা দেশে অপরিবর্তিত আজকের পেট্রোল-ডিজেলের দাম

২৫ অগাস্ট (সোমবার), ২০২৫ কলকাতায় লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১০৫.৪১ টাকা, ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৯২.০২ টাকা দিল্লিতে লিটার প্রতি...
Exit mobile version