NRC এবং CAA প্রতিবাদে শুক্রবার শহরের বুকে বিশাল মিছিল করলো বাম এবং কংগ্রেস। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল শেষ হয় মহাজাতি সদনে। যেখানে ২০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। আর এই মিছিল শেষেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বিজেপিকে কটাক্ষ করেন।

তিনি বলেন, “গতকাল গ্রহণ ছিল। দামি চশমা পরেও দেখতে যা দেখতে পাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উনি শুধু গ্রহণ কেন, গোটা দেশে কী হচ্ছে দেখতে পাচ্ছেন না। ওনাকে তো আর বাজারে যেতে হয় না। ঝাড়খণ্ড দেখিয়ে দিয়েছে, ওনার দলের গ্রহণ লেগেছে।”
এরপরই সূর্যকান্ত মিশ্র মিছিলে হাঁটা মানুষের উদ্দেশে বলেন, “আমরা NRC-CAA হতে দেব না। এই মিছিল শেষ নয়। আপনারা দেখা থেকে ফিরে গিয়ে নিজেদের এলাকায়
ধর্মঘটের কমিটি তৈরি করুন। যে যেখানে আছেন নিজেদের ঝান্ডা ধরে কমিটি করুন। ৮ জানুয়ারি বনধ সফল করুন।”

সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের দাবি, ভালোবেসে বিজেপিকে কেউ ভোট দেননি। বিজেপির বিকল্প তৃণমূল নয়। মানুষ বিজেপির বিকল্প। মানুষ ইতিহাস তৈরি করে। মানুষই বিজেপিকে দেশ থেকে তাড়াবে।

মিছিলে আর কারা কী বললেন–

বিমান বসু (বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান):

জাত-ধর্ম-বর্ণ বিভাজনের বিরুদ্ধে যারা, তারাই এই মিছিলে অংশ নিয়েছে। ২০ টি দল আগামীদিনে একসঙ্গে সব কর্মসূচি পালন করবে। বনধ করবে এই ২০টি দল একসঙ্গে।

প্রদীপ ভট্টাচার্য (কংগ্রেস নেতা):

সারা ভারতের মানুষ ফের একদিন বলবে। আজ বাংলা যেটা বলবে, সারা দেশ কাল সেটা ভাবে। আমরা ভাই ভাই এক থাকবো। কোনও বিভাজনে থাকবো না। NRC-CAA চালু হতে দেব না। বাম ও কংগ্রেসের এই মহামিছিল আগামীদিনে জন জাগরণ তৈরি করবে।

সমীর পুততুন্ড (পিডিএস নেতা)

আজকের এই মিছিল বাংলার, ভারতের বুকে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। গণতন্ত্রের প্রশ্নে, বিভাজনের প্রশ্ন এই মিছিল। সারা দেশ দেখছে মানুষ জেগে উঠেছে। জাত-ধর্মের ভিত্তিতে শাসক যা করছে, তাতে আগামীদিনে আরও সংশোধন আনবে ওরা। দেশকে বিপদে ফেলবে। যতদিন এই CAA প্রত্যাহার না করবে, এই লড়াই চলবে।

সোমেন মিত্র (প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি):

শুধু ৮ জানুয়ারি বনধ পালনের মধ্যে দিয়ে আমাদের কাজ শেষ হবে না। যতদিন কালা কানুন CAA প্রত্যাহার না হবে আন্দোলন চলবে। প্রধানমন্ত্রী রামলীলা ময়দানে দাঁড়িয়ে বলছেন ২০১৪ সালের পর থেকে NRC নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আরেক কথা বলছেন। কে ঠিক? যারা লোকসভা বা বিধানসভার সদস্য, তাঁরা জানেন সভা কক্ষে কেউ ভুল তথ্য দিলে, তাঁদের পদত্যাগ করতে হয়। আর না করলে কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইমপিচমেন্ট করা হবে না? আমাদের এই লড়াই দীর্ঘজীবি হোক।
