কলকাতার পুরভোট নিয়ে এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি৷ খসড়া সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশের পর আপত্তি জানানোর সময়সীমা এখনও পার হয়নি৷ ফলে ওই তালিকাও চূড়ান্ত নয়৷
কিন্তু বসে নেই তৃণমূল৷ কলকাতার দখল নিজেদের হাতেই রাখতে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে সলতে পাকানোর কাজশুরু করে দিয়েছে তৃণমূল ৷
গত ৫ বছর কলকাতার তৃণমূল পুরবোর্ডের কাজকর্মে অনেক ফাঁক-ফোকর থাকলেও, কাজের কাজও হয়েছে অনেক৷ সময় অনেকটাই কেটে যাওয়ায়, সেই সব কাজ নাগরিকদের স্মৃতির বাইরে চলে গিয়েছে স্বাভাবিকভাবেই৷
পুরসভার করে ফেলা সে সব উন্নয়নমূলক কাজের তালিকা এবার বই ও CD-র মাধ্যমে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ রাজনৈতিক লড়াইয়ের থেকে উন্নয়নকেই সামনে রাখতে চাইছে তৃণমূল৷
তৃণমূলের খবর, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই এ ধরনের বই প্রকাশ করা হবে। এই বইতে যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজের বিবরণ থাকবে। প্রকল্পের খরচ কত, কত মানুষ উপকৃত–সবই থাকবে।
ঠিক হয়েছে, কলকাতার মোট ১৪৪ টি ওয়ার্ড নিয়ে একটি বই এবং ওয়ার্ড ও বরোভিত্তিক আলাদা বই প্রকাশ করা হবে। এছাড়া প্রতিটি বরোভিত্তিক আলাদা আলাদা তথ্যচিত্র বা ভিডিয়ো প্রেজেন্টেশনও বানানো হবে। জানা গিয়েছে, ঝকঝকে বই এবং তথ্যচিত্রের জন্য নামজাদা সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। পুর-কমিশনার এ সংক্রান্ত নির্দেশিকাও তৈরি করে ফেলেছেন। সামনের মাসেই যাতে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য তৎপরতার সঙ্গে একাধিক কমিটিও গড়ে ফেলে হয়েছে৷ কাজের সুবিধার জন্য কলকাতাকে ৫টি জোনে ভাগ করে, ৫টি কমিটি তৈরি হয়েছে৷ এই কমিটিই বই এবং CD-র বিষয়বস্তু বাছাই করবেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, উত্তর কলকাতার জন্য গঠিত এই কমিটিতে আছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউত। দক্ষিণ কলকাতার কমিটিতে রাখা হয়েছে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার এবং বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়কে। মধ্য কলকাতার কমিটিতে থাকছেন জীবন সাহা, ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যাদবপুরের দায়িত্বে সুশান্ত ঘোষ, তারকেশ্বর চক্রবর্তী, অরূপ চক্রবর্তী। বেহালার জন্য রত্না শূর এবং সুদীপ পল্লে। এই ৫ কমিটিতেই থাকছেন স্পেশ্যাল মিউনিসিপাল কমিশনার তাপস চৌধুরি, ডিজি সিভিল পিকে দুয়া এবং মিউনিসিপ্যাল সেক্রেটারি হরিপ্রসাদ মণ্ডল৷ এই কমিটিকে পুর কমিশনার খলিল আহমেদের ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, “পানীয় জল সরবরাহে একাধিক বুস্টার পাম্পিং স্টেশন হয়েছে। নতুন পার্ক হয়েছে। বাড়ি তৈরির জটিলতা দূর করতে অনলাইন এবং ওয়ান উইন্ডো সিস্টেম চালু হচ্ছে। কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। স্কাইওয়াক হচ্ছে। টালিনালার উপর একাধিক সেতু হয়েছে। মায়ের বাড়ির সংস্কার হচ্ছে। ইলেকট্রিক চুল্লি বেড়েছে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে গরিবদের বাড়ি ইত্যাদি সবই যেন বই ও CD-তে অগ্রাধিকার পায়৷”