KMC vote 50: পল্লী থেকে ফেস বুক, আগ্রহের কেন্দ্রে সজল

আসন্ন পুরভোট। কলকাতার 50 নম্বর ওয়ার্ডে আগ্রহের কেন্দ্রে তরুণতুর্কী সজল ঘোষ। পল্লীতে সর্বত্র আলোচনা, এমনকি ফেস বুকেও যে ঝড়, সজল প্রার্থী হচ্ছেনই। কৌতূহল, কোন্ প্রতীকের?

সজলের নিজের পছন্দ তৃণমূল। কিন্তু তৃণমূল যদি তাঁকে মনোনয়ন না দেয়, তাহলে নির্দল। এবং এবার তাঁর জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত গোটা এলাকাই।

এই ওয়ার্ডে দীর্ঘদিনের পুরপিতা ছিলেন প্রদীপ ঘোষ। সজল ডাকাবুকো ছাত্রনেতা। আজ বহু এলাকার বহু নেতা তাঁর হাতে তৈরি। তৈরি একটা সময়ের পর প্রদীপবাবুর দলবদলের জন্য ধাক্কা লেগেছে সজলের চলার পথে। তবু এখনও সজল তৃণমূলের বৃত্তেই। কিন্তু কাজ করার সুযোগ কমেছে। একসময় যে সজল মধ্য কলকাতায় সিপিএমকে চোখে চোখ রেখে কথা বলতেন, তাঁকে গুটিয়ে যেতে হয়েছে তৎকালদের বাড়াবাড়িতে। বাম জমানায় বিধানসভা চলাকালীন ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়ে জেলে যাওয়ার রেকর্ড একমাত্র সজলের টিমেরই আছে।

এখন প্রদীপবাবু গুরুতর অসুস্থ। গোটা এলাকায় সামাজিক কর্মযজ্ঞ সামলান সজল। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো উত্তর-মধ্যের বৃহত্তম। এর সঙ্গে বছরভর খাদ্য মেলা, মহিলাদের জন্য মেলা, পাখি ও কুকুর প্রদর্শনী, হোলির আসর। সজলের হাসপাতালে এলাকার মানুষের যথাযথ চিকিৎসা। প্রায় প্রতিটি পরিবারে গ্রহণযোগ্য সজল। একটা বিরাট টিম নিয়ে যার যেকোনো দরকারে যখনতখন পাশে সজল।

এহেন সজল এবার জনপ্রতিনিধিত্বের পরীক্ষায় বসবেনই। তাঁর হাতে তৈরি অনেকে নেতা, কাউন্সিলর, মন্ত্রী। কিন্তু তরুণ সজল কখনও ঘরের মাটিতে লড়ার সুযোগ পান নি। টিম উৎসাহে ফুটছে। ফেস বুকের ঝড়েই স্পষ্ট।

এদিকে ওয়ার্ডে এখন কাউন্সিলর মৌসুমী। একসময় সোমেন মিত্রের স্নেহধন্যা। পরে তৃণমূলেই থেকে যান। এবার মহিলা সংরক্ষণ নেই। তবুও মৌসুমীর দাবি থাকছে সিটিং কাউন্সিলর বলে। যে সব অভিযোগের কথা শোনা যায় মৌসুমীর শিবির উড়িয়ে দেয়। তবে সজল ওরফে দেবুর যে বিরাট সামাজিক কর্মযজ্ঞ, তার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে মৌসুমী। তাঁর ভরসা শুধু প্রতীক।

এলাকার বিধায়ক নয়না বা সাংসদ তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সজলের মৌখিক সম্পর্ক ভালো। তবে প্রার্থিত্বের প্রশ্নে তাঁর পছন্দের তালিকায় মৌসুমী বা আরেক প্রার্থী শোনকার অগ্রাধিকার পাবে বলে জল্পনা। যদিও তাপস রায় থেকে সুজিত বসু, অশোক দেব থেকে তৃণমূলের আরও বহু নেতা ও শুভানুধ্যায়ীরা বক্তব্য, এবার দল সজলকে স্বীকৃতি দিক। তাতে দলেরও লাভ। এরকম যোগ্য সংগঠকরা জনপ্রতিনিধি হওয়া দরকার।

কিন্তু যদি তৃণমূল প্রার্থী না করে?
ফেস বুকে ঘুরছে সজলের কথা,” 100 দিন নয়, 365 দিনই পাশে থাকব, কথা দিলাম।”
কৈশোর থেকে লম্বা দৌড়ের পর এখন আর হাল ছাড়তে চান না সজল। তৃণমূল যদি প্রার্থী নাও করে, তিনি এবার প্রার্থী হবেনই।
এলাকার প্রতিটি মানুষ জানেন দেবু প্রার্থী। তাঁকে দেখলেই শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রশ্ন আসছে, কাদের? হেসে দেবুর জবাব,” সেটা তৃণমূল যা ঠিক করে দেবে!”

সজল নিশ্চিত, যদি কাজ আর জনসংযোগের বিচারে প্রার্থী বাছে দল, তিনিই টিকিট পাবেন। কিন্তু অন্য অঙ্ক কাজ করলে সেটা হাতে নেই।

কিন্তু নিজের হাতে যা আছে, তা হল নিজের এলাকায় নিজের কাজ আর জনসংযোগ। দলের উপর আস্থা রেখেও একক ধর্মযুদ্ধের পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছেন সজল।

ওয়ার্ড নম্বর 50 তাই কৌতূহলের কেন্দ্রে।

Previous articleব্রেকফাস্ট স্পোর্টস
Next articleপ্রধানমন্ত্রী ‘চিঁড়ে’ খেতে পছন্দ করেন !