প্রতিবাদ উপেক্ষা করেই কলঙ্কিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারতের চুক্তি

ছাত্র, কৃষক, পরিবেশবিদ এবং মহিলাদের দেশজোড়া প্রতিবাদের মধ্যেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর সঙ্গে ১৫টি চুক্তিতে সই করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শক্তি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা-র মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি হল। প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে দিল্লির রাজপথে উপস্থিত ছিলেন বোলসোনারো।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে ভারতে আমন্ত্রণ করার পরেই বাম নেতৃত্বের পাশাপাশি বহু সমাজকর্মী, পরিবেশবিদ প্রতিবাদ জানান। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায় বামপন্থী কৃষক, ছাত্র ও মহিলা সংগঠন। দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসেছিল সারা ভারত কৃষক সভা, সর্বভারতীয় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, এসএফআই, সর্বভারতীয় আখচাষি সমিতি। মূলত আমাজন বৃষ্টিবনানীতে দাবানল চলাকালীন নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে।
গত বছর বোলসোনারোর নেতৃত্বে ব্রাজিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল। ব্রাজিলের দাবি ছিল, ভারত অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে আখচাষিদের সহায়তা করছে। এই বিষয়ে প্রতিবাদে সরব হন কৃষকরা। তাদের সাফ কথা, বোলসোনারোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের অপমান করা হয়েছে। এসএফআই-এর সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ‘‘যাকে বিশ্বের ফুসফুস বলা হয়, সেই আমাজনে আগুন ধরার সময় বোলসোনারো কী করছিলেন, তা আমাদের ভাবা উচিত। আমাজনের জল-জমি-জঙ্গল খুলে দেওয়া হয়েছে কর্পোরেটদের জন্য। মোদিও এ দেশে কর্পোরেটদের জন্য সেটাই করছেন।’’ যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, একটি গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের ভোটে জিতে আসা নেতা বোলসোনারো। ব্রাজিলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ককে এ বার বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে সফল করাটা নয়াদিল্লির অগ্রাধিকার। সেই লক্ষ্যেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘‘ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের ভারত সফর দু’টি দেশের সম্পর্কে এক নতুন অধ্যায় গড়ল। ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও বহু আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভারত এবং ব্রাজিলের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। প্রতিরক্ষা এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতাকে জোরদার করতে নতুন নতুন রাস্তা খোঁজা আমাদের লক্ষ্য।’’

Previous articleনিজের এলাকাতেই হেনস্থার শিকার বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়
Next articleজীবন বাজি রেখে কাজের সুবাদে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাচ্ছেন রাজ্যের তিন দমকল কর্মী