আর মাত্র ৩দিন !

একদফা তারিখ বদল করে নির্ভয়া-কাণ্ডের ৪ অপরাধীর ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় ফাঁসির পরোয়ানা জারি হয়েছে। তৈরি তিহার জেল৷
কিন্ত ওইদিনে শাস্তি কার্যকর করা যাবে কি’না, তা নিয়ে ফের সংশয় দেখা দিয়েছে৷

দ্বিতীয় দফায় ফাঁসি স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল! কারণ চার অপরাধীর মধ্যে বিনয় শর্মার প্রাণভিক্ষার একটি আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিল। বিনয় আবার রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, ওই আর্জি তার পাঠানোই নয়। দু’টিই এখনও রাষ্ট্রপতির টেবিলে। অন্য দুই সাজাপ্রাপ্ত, পবন গুপ্ত ও অক্ষয় এখনও সুপ্রিম কোর্টের ফাঁসির আদেশ সংশোধনের আর্জি বা কিউরেটিভ পিটিশন পেশ-ই করেনি। আইনজীবী সূত্রের ইঙ্গিত, এক জনের তরফে বুধবারই কিউরেটিভ পিটিশন জমা পড়তে পারে। তা খারিজ হলেও প্রাণভিক্ষার আবেদনের জন্য আরও ৭ দিন সময় মিলবে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ ও ফাঁসির মধ্যে ১৪ দিনের ব্যবধান থাকতে হবে।

ওদিকে,নির্ভয়া-কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত অন্যতম অপরাধী মুকেশ সিং-এর উপরে তিহার জেলে ‘যৌন নির্যাতন ও মারধোর’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন তাঁর আইনজীবী। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে মুকেশের আইনজীবী অঞ্জনা প্রকাশের অভিযোগ, মুকেশকে আর এক অপরাধী অক্ষয়কুমার সিংহের সঙ্গে যৌনাচারে বাধ্য করা হয়।
ওদিকে, ৪ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন, মুকেশ সিং, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিল। রাষ্ট্রপতি সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির নেওয়া এই সিদ্ধান্তের বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনার দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মুকেশ। মুকেশের আইনজীবীর অভিযোগ, মুকেশ জেলে তার উপরে অত্যাচারের কথা লিখিতভাবে জানিয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপতির কাছে তিহার জেল কর্তৃপক্ষ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই তথ্য পেশ-ই করেনি। তাই রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত ‘খামখেয়ালি ও বেআইনি’ বলে দাবি করেছেন আইনজীবী।
মুকেশের আর্জি খারিজ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, গণধর্ষণ এবং কারও শরীরে লোহার রড ঢুকিয়ে খুন করার মতো অপরাধ করে জেলে অত্যাচার হয়েছে বলে কারও প্রাণভিক্ষা মঞ্জুর হতে পারে না। মেহতার দাবি, রাষ্ট্রপতির কাছে সমস্ত নথিই পেশ করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতের বিচার করার ক্ষমতাও খুব সীমিত বলে মন্তব্য করেন সলিসিটর জেনারেল।
মুকেশের আইনজীবী যুক্তি দেন, যখন কোনও সিদ্ধান্তে কারও জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে, তখন প্রতিটি ধাপে সব কিছু খতিয়ে দেখতে হবে। মেহতা এর উত্তরে বলেন, ‘‘মানুষের জীবনের মূল্য ও মানুষের জীবনকে কী ভাবে মূল্য দিতে হবে, তা নিয়ে এখানে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বিচিত্র বিষয় হল মুকেশ সিং এই প্রশ্ন তুলছে!’’

শুনানির চলাকালীন বিচারপতি আর ভানুমতীও প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্ট্রপতি সব দিক খতিয়ে দেখেননি তা কী করে বলা যায়? মেহতাও যুক্তি দেন, রাষ্ট্রপতির সমস্ত নথি পড়ার দরকারও নেই। কারণ তিনি আদালতের রায় পর্যালোচনা করতে বসেননি।

আজ, বুধবার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ভানুমতীর নেতৃত্বাধীন ৩ বিচারপতির বেঞ্চ এই বিষয়ে রায় ঘোষনা করবে৷
