জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শাহিনবাগের নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ সারজিল ইমাম দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে পুলিশের হেফাজতে। তাঁর গ্রেফতারিকে যাঁরা বিজেপি সরকারের অতিসক্রিয়তা ও বিরোধী স্বর দমন করার চেষ্টা অথবা সংখ্যালঘু যুবককে হেনস্থা বলে দেখাতে চাইছেন তাঁরাও কিন্তু সারজিলের বক্তব্যকে সমর্থন করছেন না। অর্থাৎ বিষয়টা এরকম, সারজিলের বক্তব্য নিন্দাযোগ্য ও অন্যায়, কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করাটাও ভুল। অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী হলে তিনি যতই প্রকাশ্য সভায় দেশকে ভেঙে ফেলার হুমকি দিন অথবা কোনও রাজ্যকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার আওয়াজ তুলুন, তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না! তাহলে আর আইনের দরকার কী? যেসব দল বা সংগঠন বা ব্যক্তি সারজিলের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরাও কি প্রকারান্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদকেই মদত দিচ্ছেন না? প্রকাশ্য সভায় কেউ দেশভাগের হুমকি দিয়ে উসকানি ছড়ানোর চেষ্টা করছে দেখলেও প্রশাসন নীরব দর্শক হয়ে থাকবে? ব্যবস্থা নেবে না? বাকস্বাধীনতার নামে কি দেশভাগের আওয়াজ তোলা যায়? পাশাপাশি আর একটা কথা। সারজিলের বক্তব্যের বিরোধিতা করেও যাঁরা তাঁর গ্রেফতারির সমালোচনা করছেন তাঁরা তো তাহলে আদালতের উপরেও ভরসা রাখতে পারছেন না! কারণ সারজিলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা টিঁকবে কিনা বা তিনি সঠিক কাজ করেছেন কিনা তার বিচার তো আদালত করবে। এক্ষেত্রে বিজেপি সরকার কোনও অন্যায় পদক্ষেপ নিলে আদালত তা অনুমোদন করবে না।

প্রসঙ্গত, সারজিল ইমামের যে ভিডিওটি নিয়ে শাহিনবাগের আন্দোলনকে ঘিরে বিতর্ক উঠেছে সেই ভিডিওতে তাঁকে দেশভাগের কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সারজিল বলছেন, দেশের উত্তরপূর্বের অংশকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এর মধ্যে শিলিগুড়িও আছে। সারজিল বলেছেন, ৫ লাখ মানুষ একজোট হলেই অসমকে পাকাপাকিভাবে ভারত থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন-‘সুন্দরবন- রূপকার’ তুষার কাঞ্জিলাল প্রয়াত
