‘কুরুচিকর রাজনীতি’ করছে বিজেপি, অভিযোগ কেজরি- কন্যা হর্ষিতা’র

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন৷ রাজধানীর মসনদ দখল করতে মরিয়া দিল্লির বিরোধী দল বিজেপি।
ভোট প্রচারে বিজেপির একাধিক নেতা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সরাসরি ‘সন্ত্রাসবাদী’ পর্যন্ত বলেছেন৷ এর উত্তরও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

এবার হর্ষিতা কেজরিওয়ালের তোপের মুখে বিজেপি নেতারা৷
‘সন্ত্রাসবাদী’ ইস্যুতে সরব হয়ে কেজরি-কন্যা হর্ষিতা বলেছেন, “বিজেপি নেতাদের এই মন্তব্য আসলে ওই দলের নিম্নরুচির পরিচয়৷” বিজেপির বিরুদ্ধে ‘কুরুচিকর রাজনীতি’ করার অভিযোগও তুলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মেয়ে হর্ষিতা৷ ২৪ বছরের এই ছাত্রীর স্পষ্ট কথা, “অভিযোগ না উন্নয়ন, কিসের উপর বিচার করে ভোট দেবেন তা মানুষই ঠিক করবেন৷ এ সব নিয়ে বিজেপিকে এত ভাবতে হবে না”৷

বিজেপি নেতাদের ‘নিম্নরুচি’- আক্রমণের জবাবে হর্ষিতা কেজরিওয়াল বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেছেন, “বিজেপি অভিযোগ করতে থাকুক৷ ওঁরা চাইলে ২০০ জন সাংসদ এবং ১১ জন মুখ্যমন্ত্রীকেও প্রচারে আনুন। তবে মনে রাখবেন ২ কোটি সাধারণ মানুষও AAP-এর হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। ১১ ফেব্রুয়ারি বোঝা যাবে যে তাঁরা বিজেপি’র অভিযোগের উপর ভিত্তি করে ভোট দিয়েছেন নাকি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উন্নয়ন দেখে ভোট দিয়েছেন”।

বিজেপিকে লক্ষ্য করে পাল্টা প্রশ্ন-তোপে হর্ষিতা বলেছেন, “বিজেপি নেতারা বলছেন, নোংরা রাজনীতি হচ্ছে৷ অথচ বিজেপিই তো প্রতিদিন কুরুচিকর রাজনীতির নতুন নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া কি সন্ত্রাসবাদ? শিশুদের শিক্ষিত করে তোলা কি সন্ত্রাসবাদ? বিদ্যুৎ ও জল পরিষেবার উন্নয়নের কাজকে কি সন্ত্রাসবাদ বলা যায়?”

প্রসঙ্গত, গত ২৫ জানুয়ারি পরবেশ বর্মা নামে এক বিজেপি নেতা এক জনসভায় বলেছিলেন, “যদি কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসে, তাহলে শাহিন বাগে যারা বসে আছে, তারাই রাস্তার দখল নেবে।” বর্মা প্রশ্ন করেন, “আমরা কাশ্মীরে পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো ? না-কি কেজরিওয়ালের মতো সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে লড়ব?”। আপত্তিকর এই মন্তব্য করায় নির্বাচন কমিশন দিনের জন্য তাঁর প্রচার নিষিদ্ধ করে দেয়।
ফের বিজেপি নেতা পরবেশ বর্মার কথারই পুনরাবৃত্তি করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর। এক সাংবাদিক বৈঠকে জাভড়েকর বলেন, “দিল্লির ভোটাররা যে কেজরিওয়ালের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কেজরিওয়াল খুব নিরীহ মুখ করে মানুষকে বলছেন, আমি কি সন্ত্রাসবাদী? আমি বলছি, আপনি একজন সন্ত্রাসবাদী। তার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। আপনি নিজেই বলেছেন, নৈরাজ্যবাদে বিশ্বাস করেন। নৈরাজ্যবাদী আর সন্ত্রাসবাদীর মধ্যে খুব একটা তফাৎ নেই।”

২৪ বছরের হর্ষিতার এই পাল্টা তোপের আগে NDTV-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলেন, “আমি কীভাবে একজন সন্ত্রাসবাদী হই? কীভাবে বিজেপি আমাকে একজন সন্ত্রাসবাদী বলে মন্তব্য করতে পারেন? দিল্লির জনগণের সেবা করার জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করেছি। আমি তাঁদের পরিবারের বড় ছেলে হিসাবে কাজ করছি। দিল্লিবাসী যাতে নিখরচায় জল, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পান সেই লক্ষ্যে আমি কাজ করেছি। তাঁদের সন্তানরা যাতে ভাল স্কুল- হাসপাতালের সুবিধা পান তার জন্যে কাজ করেছি৷ এসব দেখেই আমার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন দিল্লির মানুষ। এর মধ্যে অন্য দলের না ঢোকাই ভালো৷”

আরও পড়ুন-মহাযুদ্ধে মোদি, প্রচারে একসঙ্গে ২৪০ সাংসদ! কণাদ দাশগুপ্তের কলম

Previous articleশাহরুখ-গৌরীর নাচের ভিডিও এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল
Next articleনির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ১ সপ্তাহের মধ্যে, জানাল সুপ্রিম কোর্ট