দিল্লি বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা আগামীকাল। এপর্যন্ত সমস্ত প্রাক্ ভোট সমীক্ষা এবং বুথ ফেরত সমীক্ষার হিসাব বলছে, ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে কেজরিওয়ালের নেতৃত্বে আমআদমি পার্টি। যথারীতি, তার উল্টো মত গেরুয়া শিবিরের। দিল্লি বিজেপি সভাপতি মনোজ তেওয়ারি ৪৮ আসনে জেতার কথা বলছেন। এবারের দিল্লি ভোটের সমস্ত সাংগঠনিক কৌশল তৈরির দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভোট প্রক্রিয়ার মাঝখানে বিজেপি সভাপতির দায়িত্ব ছাড়লেও তাঁর পরিকল্পনা মেনেই প্রচার করেছে দল। এই ভোটে প্রধানমন্ত্রী মোদি হাতেগোনা সামান্য কয়েকটি সভা করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশটির কাছাকাছি সভা ও পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। রাজধানীর বিধানসভা ভোটে শাহিনবাগ ও দেশদ্রোহী ইস্যুতে মেরুকরণের প্রচারও তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। অর্থাৎ দিল্লি ভোটে দলের প্রচারের বিষয়, অভিমুখ, কৌশল রচনার প্রত্যক্ষ কাজটি করেছেন অমিত শাহই।

সূত্রের খবর, বিজেপির ভোট মেশিনারি অমিত শাহকে আশ্বাস দিয়েছে, তাঁরাই সরকার গঠন করবেন। ৫০-এর আশেপাশে থাকবে আসনসংখ্যা। বিজেপির যুক্তি, সব বুথ ফেরত সমীক্ষাই হয়েছে দুপুর তিনটে পর্যন্ত পাওয়া মতামতের নিরিখে। কিন্তু ভোট চলেছে সন্ধে ছটা পর্যন্ত। ফলে কয়েক শতাংশের হিসাবে ওলোটপালোট হয়ে যেতে পারে সমীক্ষার ফল। বিজেপির আরও যুক্তি, বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত সমীক্ষার উল্টো ফল হয়েছিল বাস্তবে। এমনকী ঝাড়খণ্ডে বিজেপির পক্ষে সমীক্ষার পূর্বাভাস থাকলেও নিদারুণভাবে হেরেছে বিজেপি।

যদিও আর কয়েক ঘণ্টা পরই আসল চিত্র স্পষ্ট হবে। বিজেপির জয়ের দাবি কি শুধু গণনার সময় পর্যন্ত কর্মীদের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা নাকি প্রকৃতই ভোট অঙ্কের হিসাবের প্রতিফলন তাও বোঝা যাবে। তবে বুথফেরত সমীক্ষার ফল যদি মিলে যায় এবং নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায় আপ, তাহলে এই ভোট তথাকথিত ‘রাজনীতির চাণক্য’ অমিত শাহর বড় ব্যর্থতা হিসাবেই চিহ্নিত হবে। তাঁর দল যতই তাঁকে আড়াল করে রাজ্য নেতৃত্বের উপর দায় চাপাক, লোকসভা ভোটের পর থেকে এপর্যন্ত হওয়া সবকটি বিধানসভা নির্বাচনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর একবগ্গা কৌশল যে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে তা অস্বীকার করলে গেরুয়া শিবিরের বিপদ কমবে না।

আরও পড়ুন-টলিপাড়ার নির্বাচনে জয়ী হলেন কারা?
