Wednesday, May 21, 2025

কলকাতা পুরসভার একটানা ৫ বারের কাউন্সিলর। এবারও তাঁর জয় একশো শতাংশ নিশ্চিত। অর্থাৎ, ডাবল হ্যাট্রিক শুধু সময়ের অপেক্ষা। কারণ স্থানীয় মানুষের কাছে তিনি কাউন্সিলর কম, ঘরের মেয়ে বেশি। এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদকে এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করলেন কলকাতা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের আড়াই দশকের পুর প্রতিনিধি বিজেপির মিনাদেবী পুরোহিত। অর্থাৎ, বাম জমানা পেরিয়ে তৃণমূলের আমলেও অপ্রতিরোধ্য উত্তর কলকাতার এই বিজেপি নেত্রী।

যতবার জিতেছেন, আগেরবারের চেয়ে ব্যবধান বাড়িয়েছেন। এবং তাঁর জন্যই বিজেপি ওই এলাকায় বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে হারলেও ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লিড পায়। শেষ লোকসভা নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

ওয়ার্ডের মানুষের সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে হাজির মীনাদেবী। সব সমস্যার সমাধানের নাম মীনাদেবী। তাঁর দাবি, সিপিএম এবং এখন তৃণমূল অনেকবার অনেক উপায় অবলম্বন করেও তাঁকে হারাতে পারেনি। কারণ, মানুষ তাঁকে ভোট দেয়। তাই তিনি মানুষের জন্যই নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। আগামীতেও করবেন।

কিন্তু এত মানসিক শক্তির রহস্য কী? মিনাদেবী পুরোহিত জানালেন, তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী। তাঁর মাথার উপর ভগবান আছেন। গীতা থেকে তিনি মানসিক শক্তি সঞ্চয় করেন। আর সবচেয়ে উপরে আছেন তাঁর প্রয়াত স্বামী। সর্বোপরি একান্নবর্তী পরিবারের সমর্থন আছে তাঁর সঙ্গে।

গত ৫ বারের কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে মীনাদেবী জানান, তিনি কাউন্সিলর হওয়ার আগে এলাকায় সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল জলের। আর এখন এতো জলের জোগান যে, নেওয়ার লোক নেই। এলাকায় ব্যাপক আলোর ব্যবস্থা করেছে। প্রায় প্রতিটি গলিতেই আলো ঝলমল করে বলে দাবি মীনাদেবীর। আগামীদিনে কেন্দ্রের গ্রিন সিটি প্রজেক্ট তাঁর ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বাস্তবায়ন করতে চান বলেই জানালেন মীনাদেবী।

তাঁর ওয়ার্ড অবশ্য বেশ ঘিঞ্জি। ফুটপাত দখল করে রয়েছে হকার্সরা। এই প্রসঙ্গে মীনাদেবী জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে কথা বলেছেন। উন্নত পার্কিং ব্যবস্থার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখানেই রয়েছে পুরসভার দুর্নীতি। সব সেটিং। মাফিয়া রাজ বলে অভিযোগ তাঁর।

কলকাতার দূষণ এবং ডেঙ্গু সমস্যা নিয়ে মীনাদেবী বলেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে। আর কাজের ব্যাপারে শাসক দলকে রাজনীতি করলে চলবে না। একইসঙ্গে মীনাদেবী মনে করেন, কলকাতা পুরসভা রেভিনিউ অর্জনে ব্যর্থ। আর সেই কারণেই ঘাটতি বাজেট হয় পুরসভায়। রেভিনিউ বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তাছাড়া বিরোধী কাউন্সিলর হওয়ায় এলাকার বিধায়ক ও সাংসদের থেকেও বিশেষ সুবিধা পান না তিনি। ওয়ার্ডের উন্নয়নের স্বার্থে তাঁদের তহবিল থেকে আসে না কোনও অর্থ সাহায্য। যদি সেটা হতো, তাহলে তিনি আরও ভালো কাজ করতে পারতেন বলেও দাবি করেন মীনাদেবী।

বিজেপি কি এবার কলকাতা পুরসভার দখল নিতে পারবে? গত ৫ বারের কাউন্সিলর মীনাদেবী বলেন, তৃণমূল গুন্ডাগিরি না করলে এবার ছোট লাল বাড়ির দখল নেবে গেরুয়া বাহিনী। যদি বিজেপির দখলে আসে পুরসভা, তাহলে মেয়র কে হবেন? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির পুর প্রতিনিধি।

Related articles

বুধে উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে জোর রাজ্যের

বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ দিনে উত্তরকন্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।...

IPL-এর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সম্মেলনের প্রচার SFI-এর! কী বলছেন সৃজন

CPIM-এর মতো বাম ছাত্র সংগঠনগুলির সমর্থনও কি তলানিতে? না হলে কেন সর্বভারতীয় সম্মেলনে লোক টানতে আইপিএলকে কাজে লাগিয়েছে...

মামলা যাঁদের, আন্দোলনে উস্কানিও তাঁদের: বাম দ্বিচারিতার পর্দাফাঁস কুণালের

চাকরিহারা শিক্ষকদের নিয়ে দুমুখো রাজনীতি বামপন্থী নেতাদের। একদিকে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে সহানুভূতি দেখানো, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata...

১৩১ পরিবার পেল মাথার ছাদ! বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য ‘তিস্তাপল্লি’ উপহার মুখ্যমন্ত্রীর

তিস্তা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছিল মেজুয়া ও লালডং চুমুকডালি গ্রামের ১৩১ জন মানুষ। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। এবার...
Exit mobile version