সিঁথি থানার তিন অফিসারকে ক্লোজ করল লালবাজার, নিখোঁজ একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী

সিঁথি থানায় ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় নাটকীয় মোড়।যে ঘটনার তদন্তের জেরে মৃত্যু হয়েছে ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউয়ের, তাতে একাধিক গাফিলতির বিষয় সামনে এসেছে । লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের কাছেও সেই বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট । তার জেরে এবং পুলিশ হেপাজতে মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের স্বার্থে বুধবার সিঁথি থানার তিন অফিসারকে ক্লোজ করা হল । লালবাজার সূত্রে এখবর পাওয়া গেছে ।পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে আশ্বাস নেই মৃতের পরিবারের। বরং তারা চান সিআইডি তদন্ত।

এদিকে, নিখোঁজ সিঁথি থানায় পুলিশের মারধরে প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আশুরা বিবি এখন কোথায়? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই এলাকাবাসী বা রাত্রিবাসের বাকি আবাসিকদের কাছে। এই ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এগারো মাস আগে আশুরা বিবি ৫ শিশু সন্তানকে নিয়ে পাইকপাড়ার রাত্রিবাসে এসে ওঠেন। এখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আশুরা বিবি। স্বামী রিকশাচালক। আর আশুরা বিবি নিজে কাগজ কুড়িয়ে দিন গুজরান করেন। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ সিঁথি থানার ২ পুলিশকর্মী রাত্রিবাসে আসেন ও তাঁকে থানায় নিয়ে যান। তারপর রাত ১০টা নাগাদ রাত্রিবাসে ফেরত আসেন আশুরা। এরপর মঙ্গলবার সকালে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা বলে বের হন আশুরা বিবি। কিন্তু তারপর থেকে আর তাঁর কোনও খোঁজ নেই।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশিকা মেনে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টও। ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এরই পাশাপাশি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকেও রিপোর্টের কপি পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।মঙ্গলবার সিঁথি থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় মৃত্যু হয় ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউয়ের।
জানা গেছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন সৌমেন্দ্র নাথ দাস, অরিন্দম দাস এবং সার্জেন্ট চিন্ময় মাহাত । এর মধ্যে সৌমেন্দ্রনাথ দাস মঙ্গলবার বুকে ব্যথা অনুভব করেন । তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে । মৃত রাজকুমারের ভাই রাকেশ সাউয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তিন অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে । তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মী হয়ে নিয়ম ভেঙে মারধর, জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় এবং জোর করে আটকে রাখা ও অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে । একইসঙ্গে আরও দুটি মামলা দায়ের হয়েছে সিঁথি থানায় । একটি থানায় ভাঙচুর চালানোর জন্য । অন্যটি থানার সামনে দুই রাজনৈতিক দলের গন্ডগোলের জেরে । তিনটি মামলাতেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে লালবাজার ।লালবাজার সূত্রে জানা গেছে, চুরির ঘটনার তদন্তে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম মানা হয়নি বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গেছে । রাজকুমারবাবুকে কোনও নোটিশ ছাড়াই আটক করা হয়েছিল বলেও খবর ।

Previous articleরাজধানীতে নোটার থেকেও কম ভোট বামেদের
Next articleকরোনা আতঙ্কে এ কী করলেন প্রৌঢ়!