রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কলকাতা দফতর সরছে ওড়িশাতে, আশঙ্কায় ভুগছেন কর্মীরা

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কলকাতা দফতর সরছে ওড়িশাতে। আরবিআই কর্তৃপক্ষের এই আচরণের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে ইউনিয়ন।এমন বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদে বড় আন্দোলনে কলকাতা দফতরের সামনে ধর্না-বিক্ষোভ শুরু করেছেন কর্মীরা। যদিও তাতেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। কতকাতার কর্মীদের আশঙ্কা, দফতর কলকাতা থেকে সরলে তাদেরও বদলি করা হবে ওড়িশায়। এই বিষয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছেন। সংগঠনের দাবি, বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আরবিআই কর্তৃপক্ষকে অনুরোধও জানিয়েছেন বলে কর্মী সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। পরিস্থিতি না বদলালে আন্দোলন আরও বড় আকার নেবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে অল ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
অথচ পরিসংখ্যান বলছে, কাজের পরিমাণ এবং কর্মী সংখ্যার নিরিখে সারা দেশে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ১৮টি দফতরের মধ্যে দ্বিতীয় কলকাতা দফতর।কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কারণ দফতর কলকাতা থেকে সরলে দ্বিতীয় স্থানের মর্যাদা খোয়াবে।যদিও আরবিআই-এর কলকাতা দফতরের চিফ জেনারেল ম্যানেজারের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি।অল ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, তাঁকে মেল পাঠিয়েও কোনও উত্তর মেলেনি।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্মী ইউনিয়নের অভিযোগ, বন্ধ হয়েছে কলকাতায় পর্ষদের বৈঠক। শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০১৬ সালে। যদিও প্রত্যেক বছর পর্ষদের বৈঠক হওয়ার কথা । অভিযোগ, একচেটিয়া কমানো হয়েছে কর্মী সংখ্যাও। নতুন নিয়োগেও কলকাতা দফতরকে অনেক পিছনে রাখা হয়েছে।এই বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য তারা তুলে ধরেন।সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমীর ঘোষের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই অন্য রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় কম লোক নিয়োগ করা হচ্ছে।এই বিষয়ে আরবিএই-এর বক্তব্য, এই দফতরে কাজ কমায় নিয়োগও কম হচ্ছে। দফতরে ক্লার্ক-এর সংখ্যা মাত্র ৩০০ জনে এসে ঠেকেছে।কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, চলতি বছরে অবসর ও প্রমোশনের ফলে প্রায় ৫০টি ক্লার্কের পদ খালি হচ্ছে। অথচ নিয়োগ করা হবে মাত্র ১০ জনকে। যেখানে সারা দেশে নিয়োগ হবে ২৯৬ জন নতুন ক্লার্ক। কমেছে অফিসারের সংখ্যাও।
কলকাতা থেকে দফতর সরানোর বিষয়ে সিঁদূরে মেঘ কর্মীরা দেখেছিলেন কয়েক বছর আগেই। আরবিআই-এর কলকাতা দফতর থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ সরানো হয়েছিল। প্রথমে ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নজরদারির কেন্দ্রীয় বিভাগ। এরপর ধাপা ধাপে সরানো হয় পূর্বাঞ্চলের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত বিদেশি মুদ্রার লেনদেন বিভাগ, কলকাতার ব্যাঙ্কগুলির উপরে নজরদারির বিভাগ এবং দেশে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্মীদের ভ্রমণ-ভাতা, ছুটি, গৃহঋণ-সহ নানা খাতে টাকা মেটানোর বিভাগ।তখন থেকেই শুরু হয়েছিল গুঞ্জন।শেষপর্যন্ত তাদের আশঙ্ককাকে সত্যি প্রমাণ করে এবার পাকাপাকিভবে আরবিআই-এর কলকাতা দফতর সরছে ওড়িশাতে।

Previous articleমুখ্যমন্ত্রী আমন্ত্রিত নন, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধনকে লজ্জাজনক বললেন তাপস
Next articleকেজরিওয়ালের শপথে আমন্ত্রিত ‘মিনি মাফলারম্যান’