তাপসকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের রাজনৈতিক সমালোচনা

শেষযাত্রাতেও তাপস পালকে নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। “তাপস পালের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”, অভিনেতা-সাংসদের মৃত্যু প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের এভাবেই পালটা বিবৃতি দিলেন বিরোধী শিবিরের বাবুল-সায়ন্তন এবং জয়প্রকাশ মজুমদাররা। বিবৃতি দিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র প্রমুখ।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এখন একটি মানুষের শেষ যাত্রার আগে কেন এই ধরনের কথা? যখন ভুবনেশ্বরে বন্দি ছিলেন তখন কেন সবাই চুপ ছিল। রাজীব কুমার কে নিয়ে যতটা সক্রিয় ছিলেন তাপস পালকে নিয়ে সেই সক্রিয়তা দেখা যায়নি কেন? কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, মানসিক চাপ নিতে পারেননি তাই অকালে চলে যেতে হল তাপসকে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির চাপ নিতে পারেননি তাপসের মতো ব্যক্তিত্ব।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে ঝাঁজালো মন্তব্য করেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। শিল্পী তাপস পালকে সবাই মনে রাখবে। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষে আমাদের প্রত্যেকেরই তো কাটাছেঁড়া হয়। ওঁর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বেশ কিছু কাজের জন্য উনি সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু আজ সেসব কথা বলার সময় নয়। রবীন্দ্রসদনে মরদেহ শায়িত। সেখানে গিয়েও রাজনীতি ! আসলে মুখ্যমন্ত্রী স্থান-কাল জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। আজকে উনি বিজেপি সরকারকে দুষছেন, এতদিন কোথায় ছিলেন? ভুবনেশ্বরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, তখন তো পাশের ঘরে তাপস পালও ছিলেন। একবারও কি তখন মনে পড়েনি ওঁর সঙ্গে দেখা করার কথা! তাপস পালের সেগুলো খারাপ লাগেনি! নিশ্চয় লেগেছে, মন্তব্য বাবুল সুপ্রিয়র।
মুখ্যমন্ত্রীকে পালটা দিয়ে সায়ন্তনও বললেন, “মৃত্যুর মধ্যেও রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা মমতা। তাপসের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি চলছে। ওঁর মৃত্যু নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। সিবিআইয়ের নজরে তো আরও অনেকে রয়েছে। তাপস পালের থেকেও বেশিদিন জেলে রয়েছে, থেকেছে। তাদের নিয়ে তো কোনও কথা বলছেন না। ওরা রাজ্যের মানুষের টাকা খেয়েছে। কত লোক ওদের জন্য আত্মহত্যা করেছে। না খেয়ে মরেছে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের কথা ভুলে গিয়ে তাপস পালের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
জয়প্রকাশ মজুমদার চাঁচাছোলা ভাষায় বলেন, “চিটফান্ডের জন্য তো বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলার মানুষদের কথা কি মনে পড়ে না মমতার? প্রতারিতদের কি মনে পড়ে না?” সবমিলিয়ে মৃত্যুর পরেও প্রয়াত অভিনেতাকে নিয়ে এই কথার ফুলঝুরি কেউই ভালোভাবে নেননি বলে মত ওয়াকিবহলমহলের।

Previous articleশিলিগুড়ি পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগ সরব তৃণমূল
Next articleপ্রতিকূলতা দূরে রেখে মাধ্যমিক দিচ্ছে দুই প্রজন্ম