মা-মেয়ে খুনে নয়া তথ্য, রিয়াকে গণধর্ষণের ছক ছিল সাদ্দাম ও সঙ্গীদের

বদলা নিতেই মা-মেয়েকে হলদিয়ায় বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল, জেরায় কবুল রমা-রিয়ার খুনের অভিযোগে ধৃত সাদ্দাম হোসেনের। কিন্তু শুধু খুন নয়, বদলা নিতে রিয়াকে গণধর্ষণের ছক ছিল তার। সেটা আন্দাজ করে দোতলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন রিয়া। পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পেলেও, বেঁচেছিলেন তিনি। মেয়ের অবস্থা দেখে মা রমা দে আর্তনাদ করলে, সাদ্দাম, শুকদেব দাস, মঞ্জুর আলম ও আমিনুর হোসেন তাঁর মুখ চেপে ধরে। দমবন্ধ হয়ে জ্ঞান হারান রমা। এরপর মা-মেয়ে দুজনকে নিয়ে ঝিকুড়খালিতে হলদি নদীর চরে নিয়ে গিয়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ার ঝিকুড়খালি এলাকায় নদীর চরে দুটি দেহ দাউদাউ করে পুড়তে দেখেন স্থানীয়রা। দগ্ধ দেহাংশ দেখে তাদের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করে পুলিশ। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ২ মৃত মহিলার পোশাক ও চুলের বর্ণনা দিয়ে পরিচয় খোঁজার চেষ্টা করা হয়। জানা যায়, দুই মহিলার নাম রিয়া দে ও রমা দে। তাঁরা নিউ ব্যারাকপুরের নরেশ চন্দ্র সরণির একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তদন্তে নেমে প্রথমে মঞ্জুর আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করেই বাকিদের নাম জানতে পারে পুলিশ। জানতে পারে রিয়া ও তাঁর মা রমাকে পরিকল্পনা করেই সেদিন হলদিয়ায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিল মূল অভিযুক্ত শেখ সাদ্দাম হোসেন। জানা যায়, রিয়ার সঙ্গে সাদ্দামের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু অভিযোগ, সাদ্দাম অন্য মহিলাকে বিয়ে করার পর থেকেই তাকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন রিয়া ও তাঁর মা রমা। রিয়া ও সাদ্দামের ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও সাদ্দামের বউয়ের হাতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা ও ফ্ল্যাট দাবি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে অভিযুক্ত। এরপরেই খুনের ছক কষে সে।
ওই দিন বারান্দা থেকে পড়ে রিয়া অজ্ঞান হয়ে যান। আর তাঁর মাকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা হয়। পরে দুজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায় মঞ্জুর ও শুকদেব। কিন্তু সাদ্দাম ও আমিনুর গাড়ি করে দুজনকে নদীর চরে পুঁতে দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। প্রমাণ লোপাট করতে পুঁতে দেওয়ার পরিবর্তে গাড়ি থেকে পেট্রোল নিয়ে মা-মেয়ের গায়ে ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
মা-মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগে ধৃত সাদ্দাম হোসেন, মঞ্জুর আলম ও শুকদেব দাসকে জেরা করে এই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সোমবার এই ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত আমিনুর হোসেনকে মুম্বইয়ের গোরেগাঁও থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Previous articleদেশে আক্রান্ত ২৮, আতঙ্কের কারণ নেই জানালেন হর্ষবর্ধন
Next articleলোকসভায় পেশ ব্যাঙ্কিং সংশোধনী বিল