Friday, August 22, 2025

বসন্ত উৎসব ঘিরে বিতর্ক রবীন্দ্রভারতীতে, কী বলছেন বিশিষ্টজনেরা?

Date:

Share post:

‘‘এই জাতীয় অসভ্যতাকে লজ্জিত করার মতো অসভ্যতা দেখিনি’’

উর্মিমালা বসু, বাচিক শিল্পী

অসভ্যতা, অশ্লীলতাও লজ্জা পায় কিছু কিছু কারণে। গতকাল যা হয়েছে, তা কোনও প্রকাশের ভাষা নেই। আমি অন্য সময়ের মানুষ। অনেক কিছু দেখে, শিখে, শিকার হয়ে বড় হয়েছি। কিন্তু এই জাতীয় অসভ্যতাকে লজ্জিত করার মতো অসভ্যতা দেখিনি। এই ঘটনার শাস্তিস্বরূপ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এড়িয়ে যাওয়া মানে প্রশ্রয় দেওয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। তোমায় যখন তোমার মা বলেছিল রকের ছেলেরা কিছু বললে এড়িয়ে যাবে। কিছু বল না। তখন সেই ছেলেরা ভেবেছিল প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। সেটা বাড়তে বাড়তে এই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। কিছু উৎসবের ভাষা আছে, কিছু আড়ালের ভাষা আছে, কিছু আত্মার ভাষা আছে। ভাষার বিবর্তন হতে হতে কোথায় পৌঁছে গিয়েছি আমরা। যিনি রবীন্দ্রনাথের গান বিকৃত করেন তাঁর কী শাস্তি হওয়া উচিত ছিল জানি না। কিন্তু সেটা যখন পল্লবিত হয়ে এখানে এসে পৌঁছেছে, আমার মনে হয় ছাত্রছাত্রীদের এই দায় বহন করতেই হবে। পীঠে যা লেখা ছিল তা মুছবে না বলেই লিখেছিল। অভিনব, আধুনিক হতে গেলে তার উচ্চতাও অন্যরকম হয়। গোটা ঘটনায় শঙ্কিত আমি।

“রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসাবে খুব লজ্জা করছে”

শ্রাবণী সেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী,

বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি ছবি দেখে। ধিক্কার জানাচ্ছি। এঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ডোবাচ্ছে সেটাও কি বুঝতে পারছে না! আমার মনে হয় আগামী বছর থেকে এই বসন্ত উৎসব বন্ধ করে দেওয়া উচিত। হালে শুরু হয়েছে এই সব। আগে তো সুষ্ঠুভাবেই হত। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসাবে খুব লজ্জা করছে। রবীন্দ্রনাথকে ভালোবাসি সকলেই। তাঁর নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে এই ধরণের  ঘটনা, খুব দুঃখ হচ্ছে।

“অত্যন্ত খেলো এবং সস্তা”

কৌশিক সেন, অভিনেতা

যথেষ্ট নিন্দনীয় একটি ঘটনা। একটা অংশ আছে যাঁরা খুবই সচেতন। এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে লড়াই করছে পড়ুয়ারা। তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে এই ধরণের আচরণ। যা অত্যন্ত খেলো এবং সস্তা। এটা ওঁদের একটা ক্রাইসিস। যে কোনও উপায়ে এঁরা দৃষ্টি আকর্ষণ চায়। কিন্তু আসলে এঁরা মানসিক ভাবে অসুস্থ। যে কোনও কারণেই হোক এরা মনে করে উপেক্ষিত হচ্ছে। এঁদের মধ্যে চলে এমন একটা কিছু কর যাতে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। যেখান থেকে লোকে আলোচনা করবে। চট করে সেলিব্রিটি হওয়ার চেষ্টা। ভালো বা খারাপ বিবেচনা না করেই এই ধরণের কাজ করা বলে আমার ধারণা।

“সমালোচনা করলে কীভাবে করা হবে সেটাও জানা উচিত”

অনীক দত্ত, চিত্র পরিচালক

রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। এটা একটা বহিঃপ্রকাশ। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা থাকে। যদি বিরোধিতা থাকে তাহলে এইভাবে প্রকাশ পাওয়াটা সমীচিন নয়। ওরা কী বলার চেষ্টা করছে সেটা জানা দরকার। কোনও গান বা গল্প তার শব্দের জন্য তাকে এড়িয়ে যাব, ব্যক্তিগত ভাবে এই গোঁড়ামি আমার নেই। কিন্তু এই ছবি কি সেই ছবি? সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে চোখে পড়ার প্রবণতা তৈরি করা চেষ্টা করে অনেকে। পড়ুয়ারা যেমন রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত দিচ্ছে, তার পাশে দাঁড়িয়ে এই কাজ শালীনতার গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। দারুণ করেছে বা না করেছে বলার মতো বিষয় নয়। সমালোচনা করলে কীভাবে করা হবে সেটাও জানা উচিত।

spot_img

Related articles

গৃহস্থের বাড়িতে চুরির দায়ে ধৃত বিজেপি মণ্ডল সভাপতির ভাই সহ ৪ 

বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ এক গৃহস্থের বাড়িতে চুরি ও লুটপাটের ঘটনায় পুলিশের জালে বিজেপির মণ্ডল সভাপতির ভাই-সহ...

সোনা জয়ী অভিনবকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জুনিয়র (Asian Shooting Championship) এয়ার রাইফেল বিভাগে বাংলার অভিনব সাউয়ের (Abhinaba Shaw)। তাঁর এই সাফল্যই...

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...