অবশেষে নির্ভয়াকাণ্ডে চার দোষীর ফাঁসি কার্যকর

অবশেষে ফাঁসি হল নির্ভয়া কাণ্ডের চার অপরাধী- অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা ও পবন গুপ্তর। অপরাধ করার সাত বছর তিন মাস পরে তাদের প্রাণদণ্ড কার্যকর হল। এর আগে তিনবার ফাঁসির দিন ঘোষণা হয়েছিল। প্রথম দিন ছিল 22 জানুয়ারি, ,সেটা পিছিয়ে 1 ফেব্রুয়ারি, এবং তারপর 5 মার্চ। প্রত্যেকবারই আইনের সহায়তায় ফাঁসি এড়িয়ে গিয়েছে দোষীরা। কিন্তু শেষবেলায় আর তাদের পরিকল্পনা কাজে এল না। আদালতের রায় অনুযায়ী, শুক্রবার ঠিক ভোর সাড়ে পাঁচটায় 4 ধর্ষক-খুনির ফাঁসি হয় তিহার জেলে।
বারবার ফাঁসির সাজা পিছিয়ে যাওয়ায় আদালতে রাগ-ক্ষোভ-দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। কিন্তু বৃহস্পতিবার যখন দিল্লির পাটিয়ালা হাউজ কোর্টের নির্দেশে ফাঁসি নিশ্চিত হয়ে যায় তখন তিনি বলেন, “এতদিনে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। আমি নিজেও এরপর কিছুটা শান্তিতে থাকতে পারব”।
2012 সালের 16 ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে প্যারামেডিকেলের ছাত্রী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ ও নির্মম অত্যাচার করে ছয় দুষ্কৃতী। নির্ভয়ার সঙ্গে থাকা বন্ধুকেও মারধর করা হয়। তারপর চলন্ত বাস থেকে হাইওয়েতে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় দুজনকে। এরপর বেশ কিছুদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হার মানে নির্ভয়া। তারপর থেকেই এই কাণ্ডে অপরাধীদের চরম শাস্তির দাবি ওঠে বিভিন্ন মহলে। দেশজুড়ে প্রতিবাদ-আন্দোলন হয়। ধরা পড়ে 6 অভিযুক্ত। মামলা চলাকালীন একজন জেলের মধ্যে আত্মহত্যা করে। আর একজন ঘটনার সময় নাবালক থাকায় জুভেনাইল আদালতে তার বিচার হয় এবং ঘটনার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই সে ছাড়া পেয়ে যায়। বাকি চারজন দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই লড়ে। দিল্লি আদালত তাদের প্রাণদণ্ড দেয়। তার বিরোধিতা করে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম আখ্যা দিয়ে শীর্ষ আদালত নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে। কিন্তু ফাঁসি কার্যকর হওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টালবাহানা চলছিল। বারবার ফাঁসির দিন ঘোষণা হলেও তা পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন নির্ভয়ার মা-বাবা। কিন্তু দেরি হলেও অবশেষে চরম শাস্তি পেল নির্ভয়া কাণ্ডের অপরাধীরা।

Previous articleএক একটি লিভারের সঙ্গে ফাঁসিঘরের দুটি করে দড়ি যুক্ত করা হয়েছে!
Next articleমেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, তবে ন্যায় দিতে পারলাম: নির্ভয়ার মা