‘জনতা-কার্ফু’ আসলে LOCK-DOWN-এর প্রোমো

ভারতে করোনাভাইরাস এখন ‘স্টেজ-২’-তে৷ ‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ’ -এর খবর না আসা পর্যন্ত এই পর্যায়েই থাকবে৷ কিন্তু ‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ’-এর হদিশ মিললেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকা অনুসারে ভারতের ঠাঁই হবে ‘স্টেজ-৩’-এ৷ সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে দেশজুড়ে ‘LOCK-DOWN’-ই একমাত্র পথ৷

দেশজুড়ে ‘LOCK-DOWN’ হতে পারে অথচ সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্রও ধারনা নেই ভারতবাসীর৷ কিন্তু এই শব্দটি বারে বারে ভেসে উঠছে ইদানিং ৷ একটা অজানা ভয়ের আবহও তৈরি হচ্ছে এই
‘LOCK-DOWN’ ঘিরে৷
রাজনৈতিক তথা বিশেষজ্ঞ মহলের ধারনা, প্রধানমন্ত্রীর ডাকা এই ‘জনতা-কার্ফু’ আসলে ওই জাতীয়স্তরের ‘LOCK-DOWN’-এর ট্রায়াল৷ তা না হলে, মারন-করোনা’র মোকাবিলায় মাত্র একদিনের এই ‘জনতা-কার্ফু’ যে কোনও কাজেই লাগবে না, তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই৷

আগামী ২২মার্চ, রবিবার, দেশজুড়ে ‘জনতা- কার্ফু’-র মোড়কে কার্যত ‘LOCK-DOWN’-এরই ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ ওইদিন, দেশবাসী সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নিজেদের গৃহবন্দি রাখবে৷ এবং বিকেল ৫টা নাগাদ বাড়ির সদর দরজা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঘন্টা বাজাবেন বা গান করবেন বা হাততালি দেবেন বা স্লোগান দেবেন৷ ‘জনতা- কার্ফু’ কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপটি আসলে আলঙ্কারিক৷ জনতা- কার্ফু’-কে জাস্টিফাই করতে হাততালি দেওয়ার কার্যক্রম রাখা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷

কেন এই ‘জনতা কার্ফু’, বৃহস্পতিবারের ভাষণে সেটাও আংশিক বুঝিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ৷
প্রধানমন্ত্রী এদিন তাঁর ভাষণের মধ্যেই বোঝাতে চেয়েছেন, করোনা-র প্রকোপ ‘গোষ্ঠী-সংক্রমন’ স্তরে পৌঁছালে ভারতের মতো ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে৷ সেই ভয়ংকর পরিস্থিতি মোকাবিলার পথ একটাই, LOCK-DOWN বা নিরাপত্তার স্বার্থে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধ করা৷ আর সেই পদক্ষেপ করার আগে দেশবাসীকে একটা ‘প্রোমো’ দেখাতে চান নরেন্দ্র মোদি৷ সে কারনেই ২২ মার্চ দেশে ‘জনতা-কার্ফু’৷

এই ‘জনতা-কার্ফু’-র ব্যাখ্যায় মোদি বলেছেন, ভারতবাসী নিজের সুরক্ষায় নিজেই কার্ফু ঘোষণা করে, নিজেই সেই কার্ফু সফল করবেন৷ ওইদিন স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি থাকবেন৷ জরুরি কাজ না থাকলে বাড়ির বাইরে এক পা- ও বেরোবে না গোটা দেশ।
আর এর পরই প্রধানমন্ত্রী হালকা সুরে বলেছেন, “২২ মার্চের জনতা কার্ফুর সাফল্য এবং জনতা কার্ফুর অভিজ্ঞতা ভারতের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া করোনা’র “কমিউনিটি-ইনফেকশন”-এর চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে কার্যকর ভূমিকা নেবে৷ LOCK-DOWN- এর ঘোষণির সময় প্রধানমন্ত্রী ফের একবার বলতে পারবেন, “আমি আপনাদের কাছে যা চেয়েছি তা পেয়েছি। নিরাশ হতে হয়নি। আমি আপনাদের কাছে ‘জনতা-কার্ফু’ চেয়েছিলাম৷ আপনারা সেই কার্ফু সফল করে আমাকে আশাহত করেননি৷ এবার ওই ‘জনতা-কার্ফু’-র ধাঁচেই দেশজুড়ে LOCK- DOWN লাগু করা হচ্ছে৷ করোনা ঠেকাতে এবারও আপনারা আমাকে আশাহত করবেন না৷”

অনেকেই বলছেন, দেশবাসীকে ‘আণ্ডার এস্টিমেট’ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ যে দেশবাসী নিজেরা রক্ষা পেতে দিনের মধ্যে ৩০-৪০ বার হাত ধুচ্ছে, যারা নিজেরাই সেলফ-আইসোলেশনে যাচ্ছে, মাস্ক পড়ছে, স্যানিটাইজার নিয়ে ঘুরছে, সেই দেশবাসী প্রয়োজনে একশোবার মানবে LOCK-DOWN, সেজন্য ‘জনতা-কার্ফু’-র প্রোমোর দরকারই ছিলোনা!

Previous articleব্রেকফাস্ট নিউজ
Next articleব্রেকফাস্ট স্পোর্টস