মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, এরা কারা??

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, এই কারণেই পুলিশ যতই ভাল কাজ করুক মানুষ তাদের মধ্যে কখনই ইতিবাচক কিছু দেখতে পারেন না। এই যেমন এই ভিডিওটি। আশা করি এই ভিডিওটি অন্তত কোনও মিথ্যা কথা বলছে না! এক মহিলা লক ডাউনের মাঝে সাইকেলে আসছেন। সাইকেলে ঝোলানো জিনিসপত্র। বোঝাই যাচ্ছে ঘুরতে বের হননি কিংবা এই ভরা বাজারে প্রেম করতেও বের হননি! সাদা পোশাকের পুলিশ রাস্তা আলো করে দাঁড়িয়ে। তারা পুলিশ না সিভিক পুলিশ পোশাক দেখে বোঝা দায়। তাদের মাঝখানে দিয়ে যাচ্ছেন। পালোনোর চেষ্টাও করেননি। প্রথমেই কী দেখা গেল?

মহিলা সাইকেল নিয়ে তাদের সামনে আসতেই এক মহিলা পুলিশ তাঁকে লাঠি দিয়ে পিঠে মারলেন। সাইকেলে বসে থাকা মহিলা বললেন ‘ আরে কিনতে যাব তো জিনিসটা?’ এবার তথাকথিত ওই পুলিশকর্মী মহিলার বিস্ফোরক জিজ্ঞাসা— ‘কেন বাড়িতে কোনও ছেলে নেই?’ ভাবা যায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। তিনি রাস্তায় নেমে মানুষকে সাহস দিচ্ছেন, শৃঙখলারক্ষা করছেন। আর এই তথাকথিত মহিলা পুলিশ বলেন জানতে চান, বাড়িতে কোনও ছেলে নেই? মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী জানতে ইচ্ছা করে…
১. কোনও কথা শুরুর আগেই আমজনতার গায়ে লাঠি মারা কোন দেশের আইন। কোন দেশের সভ্যতা? কোন পুলিশি দিদিগিরি?
২. মহিলারা বেরোতে পারবেন না, রাজ্যও নির্দেশ দেয়নি, কেন্দ্রও দেয়নি। তাহলে এই তথাকথিত মহিলা পুলিশ কোন সাহসে বলেন, বাড়িতে ছেলে নেই!
৩. যদি ছেলেদের বের হওয়ার নিয়মই চালু হয়, তাহলে এক ডান্ডা মেরে তাকে কেন জিজ্ঞাসা করা হবে না… তুই কেন বেরিয়েছিস?

তুই কেন বললাম? শুনুন এর পরের কথোপকথন। সাইকেলে চড়া মহিলা বলছেন, না বাড়িতে কেউ নেই। চলুন দেখবেন চলুন… এবার সেই তথাকথিত মহিলা পুলিশ বলছেন, ‘ ফের উল্টোপাল্টা কথা বলবি না…এ..ক ডান্ডা দেব।’ বলেই ফের পিঠে এক ডান্ডা। এবার মারমুখী ভঙ্গিতে… ‘মুখে মুখে তর্ক করিস বলে এরজন্যই মারব।’ তর্ক? কার সঙ্গে? এটা তর্ক? কিছু জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দেওয়া তর্ক? তুই তোকারি? লাঠি মারা? এবার সাইকেল আরোহী মহিলা সাইকেল নিয়ে এগিয়ে যেতেই ফের আর এক লাঠি তথাকথিত মহিলা পুলিশের… ‘যা এখান থেকে..’!!

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, এরাই পুলিশের বদনাম করে। এদের জন্য পুলিশের উপর মানুষের আস্থা থাকে না। প্রশ্ন, সব পুলিশকর্মী কী এই ধরণের? উত্তর না। কিন্তু এই সব অসভ্য, বর্বর, অশিক্ষিতরা পুলিশের উর্দিতে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা না করে হাতে ডান্ডা থাকার অ্যাডভান্টেজ নিচ্ছেন। তাই পাল্টা যখন উল্টোদিকের লোকজন ডান্ডা ধরেন, তখন এইসব পুলিশকর্মীকে টেবিলের তলাতেই লুকোতে হয়।

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, সারা পৃথিবী এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আপনি সামনে থেকে রাজ্যকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সরকার বেকায়দায়, দেশ বেকায়দায়, মানুষও এই মুহূর্তে আতঙ্কিত। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রশাসন মানবিক ভূমিকা পালন করছে, সবাই দেখছেন। কিন্তু এইসব ‘শত্রু’দের ঘরে রাখুন, দীর্ঘ শাস্তিতে পাঠান। এদের ডান্ডা মারার মধ্যে যেন একটা পাশবিক তৃপ্তি রয়েছে। তাই এদের যেখানে থাকার কথা সেখানেই পাঠান।

Previous articleমমতার তহবিলে সত্যমের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র এক লাখ?
Next articleকঠিন এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকার সহজ দাওয়াই মুখ্যমন্ত্রীর