রামরাজাতলার রাম পুজোয় এবার করোনা আতঙ্কের থাবা

আড়াইশো বছর আগের ইতিহাস বুকে নিয়ে আছেন হাওড়া রামরাজাতলার সগুম্ফ রাম। হাওড়া থেকে ট্রেন ধরলে দাস নগরের পরের স্টেশন রামরাজাতলা। শ্রী রামের নাম অনুসারে এই এলাকা তথা স্টেশনের নাম। এমনিতে শ্রীরামের ছবিতে কোথাও গোঁফের দেখা মেলেনা। পুরানে রামের জটার বলা হলেও, গোঁফের উল্লেখ পাওয়া যায় না। পশ্চিমবঙ্গের কিছু কিছু প্রাচীন রাম মন্দিরে অবশ্য গোঁফওয়ালা রামমূর্তি দেখা যায়। রামরাজাতলা সগুম্ফ রাম পুজো প্রচলন করেন আজ থেকে আড়াইশো বছর আগে এলাকার জমিদার অযোধ্যা রাম চৌধুরী। স্বপ্নাদেশ পেয়ে সগুম্ফ শ্রীরাম মূর্তি পুজোর প্রচলন করেন তিনি। আগে এখানকার প্রধান পূজা ছিল সরস্বতীর। তাই প্রথমদিকে এই দুই পূজার আহ্বায়কদের মধ্যে প্রচণ্ড গণ্ডোগোল বাঁধে। তারপর নানারকম আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে ঠিক হয়, সরস্বতী কে প্রাধান্য দিতে , দেবীর পুজোর দিনে শুরু হবে রামের কাঠামো তৈরির কাজ।সেই ট্র্যাডিশন আজও চলে আসছে। আগে রামনবমীর দিনে পুজোর সূচনা হত, তিন দিনব্যাপী চলত পুজো বর্তমানে পুজোর মেয়াদ ৪ মাস। শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার রামের ভাসান যায়। এই চার মাস ধরে মন্দির চত্বরে বসে মেলা। প্রায় ২২ ফুট লম্বা এবং ১৬ ফুট চওড়া এই রাম মূর্তি।

সবুজ রঙের সগুম্ফ রাম মূর্তির সঙ্গে সীতা, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন ছাড়াও থাকেন বিভীষণ, শিব, ব্রহ্মা, সরস্বতী সহ আরো ২৬ জন দেবদেবী। মূল মন্ডপের বাইরে শ্রী রামের দিকে মুখ করে দাঁড়ালে, বাঁদিকে অধিষ্ঠান করেন হনুমান। তবে আড়াইশো বছরের জাঁকজমকে এবারে ভাটা পড়ল করোনা  আতঙ্কে। এবারের রামনবমী তে রামের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হবে শুধুমাত্র রীতি পালনের জন্য। মন খারাপ চৌধুরীবাড়ির বর্তমান প্রজন্মদের। মন খারাপ এলাকাবাসীর।

Previous articleBREAKING: নিজামুদ্দিনের সম্মেলনে বাংলার ১৩ জন চিহ্নিত, খোঁজ চলছে বাকি ৬০ জনের
Next articleতামিলনাড়ু ফেরত পরিবারকে ঘিরে উত্তেজনা খড়দহে