‘সমাজ-বন্ধু’ পুলিশ, নাগরিকদের নিশ্চিন্তে রাখার পাশাপাশি চলছে টানা রক্তদানও

কুর্ণিশযোগ্য পদক্ষেপ পুলিশের !

করোনা-আতঙ্ক ও লকডাউনের মতো কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে নিশ্চিন্ত রাখতে এমনিতেই ২৪ ঘন্টা পথে আছেন তাঁরা৷ একা থাকা প্রবীনদের কাছে খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি হাজারো কাজে ব্যস্ত থাকার মাঝেই আরও মহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কলকাতা পুলিশ ৷
লকডাউনের জেরে রাজ্যজুড়ে ভয়াবহ রক্তের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে৷ আর এই সঙ্কট কাটাতে গত সোমবার পুলিশকে রক্তদান শিবিরের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুসারেই বুধবার থেকে
একমাসব্যাপী রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করেছে কলকাতা পুলিশ৷ ওইদিন বিকেল ৫টায় মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা পুলিশের মাসব্যাপী রক্তদান কর্মসূচির সূচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘বাংলায় পুলিশ এই কঠিন সময়ে প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা সামাল দিয়েও ১৩০০ বোতল রক্ত দিচ্ছে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য এই রক্ত একান্তই জরুরি।”
এক হিসাবে দেখা গিয়েছে, রাজ্য প্রতিদিন ১১০০ বোতল রক্ত দরকার হয় থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য। সেই চাহিদা মেটানোর দায়িত্বও এবার কাঁধে নিয়েছে পুলিশ৷

শুধু কলকাতায় নয়, একই সময়ে রাজ্য পুলিশের সব জেলা, ব্যাটেলিয়ন ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটেও একমাস ধরে এই রক্তদান প্রকল্পের কাজও একই সঙ্গে শুরু হয়েছে। সেখানে রক্তদান করছেন পুলিশ অফিসার ও কর্মীরা।

করোনাসংক্রমণ যাতে না-ছড়ায়, সেই কারনেই চলছে লকডাউন৷ এর ফলে সর্বত্র বন্ধ রক্তদান শিবির। ক্লাব কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতো, সে সবই এখন বন্ধ। ফলে তৈরি হয়েছে রক্তের সংঙ্কট। ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন ভাবে পুলিশ কর্মীরা প্রয়োজন হলেই অসুস্থদের রক্ত দিচ্ছিলেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বড়ভাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে আহ্বান জানান৷ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রতিদিন রক্তদান করছেন কলকাতা পুলিশের কর্মী-অফিসাররা। লালবাজার সূত্রে খবর, রবিবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬দিন, প্রতিদিনই কমপক্ষে ৬০ জন পুলিশকর্মী রক্তদান করবেন। কলকাতা পুলিশের ৩০টি ইউনিট ও ডিভিশনের তরফে রোজ বিকেলে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে। শুধু কলকাতার পুলিশকর্মীরা নন, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা-সহ সিভিক ভলান্টিয়ার, পুলিশ- পরিবারের লোকজনও রক্তদানে এগিয়ে এসেছেন।
পুলিশকর্মীরা দিন-রাত
পরিশ্রমের পরেও যেভাবে রক্তও দিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের জন্য, তা নিঃসন্দেহে স্যালুটযোগ্য৷

Previous articleঅসম-বাংলা সীমান্তে মদ সহ ধরা পড়ল বিডিও-র গাড়ি
Next articleরবিবার রাত ৯টার পরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট? আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা