রোটি-কাপড়া-মাকান এই তিনটে জিনিস মানুষের জীবনের সবথেকে প্রয়োজনীয় বস্তু। কিন্তু করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে লকডাউনের জেরে এখন প্রথমটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দিনে দুবার অন্তত খাবার পাওয়া যাবে কি না জানেন না অনেকেই। বেশিরভাগের সমস্যা অর্থাভাব। আর কিছু মানুষের সমস্যা শারীরিক অক্ষমতা; সে যে কারণেই হোক না কেন। এদের অর্থাভাব তেমন না থাকলেও বাড়িতে একা বা অল্প সংখ্যক লোক থাকেন, আর তাঁদের কাজের জন্য নির্ভর করতে হয় বাইরের কারও উপর। দু মুঠো খাবারের জন্য এঁরা এখন সত্যিই পরমুখাপেক্ষী। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন জোকার জেনেক্স ভ্যালির বাসিন্দা স্তুতি চট্টোপাধ্যায়। শহরের একটি পরিচিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব স্তুতির পরিবারের। তবে এই পরিস্থিতিতে সেটা বন্ধ। কিন্তু তাঁর হেঁশেল বন্ধ হয়নি। অনেক লোককে একসঙ্গে খাওয়ানোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বয়স্কদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করেছেন স্তুতি। তাঁর নিজের বাড়িতে গৃহস্থলীর কাজের লোক আসছেন না। তাও সব সময় সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিদিন 60 জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে বাড়ির দরজায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন এই মহিলা।

নিজেই সকালে বেরিয়ে বাজার করে আনেন। তারপর বাড়িতে মায়ের সাহায্য নিয়ে বারোটার মধ্যে রান্না করে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেন। যেহেতু বয়স্কদের জন্য রান্না করছেন স্তুতি তাই নজর রাখেন সহজপাচ্য খাবারের দিকে। শুধু তাই নয়, দস্তুর মতো দস্তানা পরে, মুখ ঢেকে তবেই রান্না করছেন এবং পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।
এতে ব্যবসায়িক সাফল্য আসছে একথা অস্বীকার করেননি এই মহিলা। কিন্তু তার পাশাপাশি তিনি জানালেন, বাড়িতে 101 বছরের দিদা আছেন। সেই কারণে বৃদ্ধ মানুষদের রান্না করা খাবার না পেলে কী সমস্যা হয় সেটা তিনি বোঝেন। কটা টাকার জন্য নয়, লকডাউনের বাজারেও যেন বয়স্করা স্বাস্থ্যকর, রান্না করা খাবার মুখের সামনে পান, তার জন্যই এই উদ্যোগ। আরও বহু মানুষ যদি এভাবে ভাবেন, তাহলে হয়তো প্রশাসনের উপর চাপ কিছুটা কমে।
