Wednesday, December 17, 2025

উড়ান চালু হলেই যাব কলকাতায়, সেখানে একা রয়েছেন আমার মা

Date:

Share post:

বাপ্পাদিত্য ভট্টাচার্য্য, হায়দরাবাদের বাসিন্দা

এক অচেনা হায়দারাবাদ। কর্মসূত্রে গত কয়েক বছর রয়েছি ইউসুফগুড়ায়। হায়দরাবাদে থাকলেও আমার মন পড়ে আছে কলকাতায়। সেখানে আমার বয়স্ক মা একা রয়েছেন। উড়ান চালু হলেই একবার তাঁকে দেখে আসার ইচ্ছে রয়েছে। আর রয়েছেন আর একজন, যাঁর সঙ্গে 17 এপ্রিল গাঁটছড়া বাঁধার কথা ছিল। কিন্তু এই কঠিন সময় যে তারিখটা পিছোতে হয়েছে।
লকডাউনের শুরু থেকে এখানকার মানুষজন মোটামুটি নিয়ম মেনেই চলছেন। প্রথম সপ্তাহে উপেক্ষার সামান্য প্রবণতা থাকলেও, পুলিশের কড়া ভূমিকায় দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে যে যার ঘরে ঢুকে গিয়েছেন। পুরো হায়দরাবাদে সকাল থেকে দোকান-বাজার খোলা থাকলেও বেলা বাড়লে আস্তে আস্তে ঝাঁপ বন্ধ করেন সবাই। দুপুর থেকেই বন্ধ সবকিছু। শুধু রাস্তায় কয়েকটি গাড়ি আর বাইকের আনাগোনা। সঙ্গে রয়েছে পুলিশ পেট্রলিং।
তবে এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অসুবিধায় পড়েছেন অন্ধ্র থেকে তেলেঙ্গানায় আসা পড়ুয়া অথবা চাকরিজীবীরা। কোভিড 19-এর ভয় বাড়িওয়ালারা তাঁদের ভাড়াটে এবং পেয়িং গেস্টদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বলেন। তার জন্য তাঁদের সময় দেওয়া হয় মাত্র 24 ঘণ্টা। এই পরিস্থিতিতে কোনও রকমে পুলিশের পাশ জোগাড় করে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন অন্ধ্র- তেলেঙ্গানা সীমানায়। কিন্তু অন্ধ্রের প্রশাসন তাঁদের নিজের রাজ্যে ঢুকতে দিতে চায়নি। পাস থাকা সত্বেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাঁদের। 5-6 ঘণ্টা পর দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথোপকথনে পরিস্থিতি বদলায়। নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে পারেন তাঁরা। তবে আমরা যাঁরা দূরের রাজ্য থেকে এখানে এসেছি তাঁদের অবশ্য কিছু বলেননি বাড়ির মালিকেরা। তবে এই ঘটনা কানে যেতেই রাজ্যের তরফ থেকে বাড়ির মালিকদের উপর কড়া নির্দেশও এসেছিল।
সমস্যায় পড়েছেন আর শ্রেণির মানুষ- পরিযায়ী শ্রমিকরা। এখানকার আইটি সেক্টরে যাঁরা বহু সংখ্যায় কাজ করেন। এখন তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রের বেশিরভাগ কাজই হচ্ছে বাড়ি থেকে। সুতরাং দিনমজুরদের কোনও কাজ নেই। এই অবস্থায় ভিন রাজ্যে পড়ে থাকাটা তাঁদের পক্ষে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সরকারি তরফে তাঁদের মাথাপিছু 12 কেজি করে চাল আর 500 টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে কদিন? কবে ফিরবে পরিস্থিতি? সেই আশায় চেয়ে রয়েছেন সবাই। তবে এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থাকাটাই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। আশা রাখছি 21 দিন পরে আমরা আবার স্বাভাবিক ছন্দে জীবনে ফিরতে পারব। তবু চাইব যতদিন না করোনাভাইরাসের করাল থাবা দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, ততদিন বজায় থাকুক সামাজিক দূরত্ব, নিরাপদে থাকি আমরা।

 

spot_img

Related articles

যোগী রাজ্যে বাতিল ম্যাচ, সমালোচনার মুখে বিসিসিআই

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে লখনউতে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (India and South Africa )চতুর্থ টি২০ ম্যাচ ভেস্তে গেল।  গোটা...

বন্ধ থাকবে বিদ্যাসাগর সেতু, কোন রুটে হবে কলকাতা ম্যারাথন? জানুন বিস্তারিত

আগামী ২১ ডিসেম্বর টাটা স্টীল কলকাতা ম্যারাথন(25K Kolkata)। তার  আগে বুধবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যারাথনের রুট ঘোষণা হল। ...

জিটিএ শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের রায় ঘিরে পাহাড়ে স্কুল ধর্মঘটের ডাক

কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল দার্জিলিং পাহাড়ের শিক্ষা পরিস্থিতি। জিটিএ অঞ্চলে ৩১৩ জন শিক্ষক...

ফুটেজ না দেখা পর্যন্ত মন্তব্য নয়! কীর্তি ইস্যুতে কড়া অবস্থান অভিষেকের

সংসদের ভিতরে ই-সিগারেট ব্যবহারের অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর সংসদে এই অভিযোগ...