Monday, August 25, 2025
কণাদ দাশগুপ্ত

দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করেছে৷

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, সকাল ৮টায় কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, গোটা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০,৩৬৩ জন৷ এর মধ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮,৯৮৮ জন৷ ছাড়া পেয়েছেন ১,০৩৫ জন৷ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৩৯ জনের৷ গত ২৪ ঘন্টাতেই মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের৷

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, দেশে মোট আক্রান্ত ১০,৩৬৩ জনের মধ্যে ৮,১৫৩ জনই বাস করেন ৮ টি রাজ্যে৷ এই রাজ্যগুলি হলো, মহারাষ্ট্র, দিল্লি,তামিলনাড়ু, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাত ৷

এই ৮ রাজ্যেই দেশের মোট করোনাক্রান্তের ৭৯% রয়েছেন৷ বাকি ২১% বা ২২১০ জন দেশের বাকি রাজ্য মিলিয়ে বাস করছেন৷

গোটা দেশের যা ছবি, ঠিক তার উল্টো ছবি কেরলে৷ ওই রাজ্যে গত ১ সপ্তাহ যাবৎ নতুন সংক্রমিতের সংখ্যার থেকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া রোগীর সংখ্যা বেশি।

সোমবারের পর কেরলে আপাতত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমেছে৷ এবং ছাড়া পাওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়েছে। তাই কেরল এখন দাবি করছে, করোনা-গ্রাফ ‘সমান’ হচ্ছে কেরলে।

লকডাউন এবং সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-ই এখন গোটা দেশের জন্য একমাত্র ওষুধ৷ কিন্তু এর পাশাপাশি ওই ৮ রাজ্য, দেশের যে রাজ্যগুলি এই মুহুর্তে কার্যত করোনার তথাকথিত ‘হটস্পট’, সেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাত-এর জন্য বাড়তি কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বা আর কঠোর কিছু শর্তাদি পালনের কথা এদিন প্রধানমন্ত্রীর বলা দরকার ছিলো৷

এই ৮ রাজ্য এবং কেরলকে একাসনে বসানো হলে ওই ৮ রাজ্যের প্রতি অবিচার হয়৷ এতে ৮ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকবে৷

এই রাজ্যগুলির মধ্যেই আছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রও এই উত্তরপ্রদেশেই৷ এবং অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাত৷

দেশের স্বার্থে দেশবাসী নিশ্চিতভাবেই আগামী ৩ মে পর্যন্ত কঠোরভাবে লকডাউন পালন করবেন৷ সকলেই এই দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে চাইছেন৷ লকডাউন এবং সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-ই যে করোনাভাইরাসের একমাত্র ‘ওষুধ’, সেটাও দেশের মানুষ বুঝেছেন৷ তাই, ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন ফের সফল হবেই৷

গোটা দেশ এখন দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা যুদ্ধে সামিল৷ তার মাঝেও এই সংহতি বিনষ্ট করার একটা চেষ্টা চলছে বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের আইটি সেলের তরফে৷

ওই সেলের কিছু বসন্তের কোকিল অযাচিতভাবে এবং অনধিকার চর্চা চালিয়ে বিভিন্ন রাজ্যকে “পরামর্শ” দিয়ে চলেছে৷ তাদের ধারনা, এই পরামর্শ মানলেই অবধারিতভাবে করোনা থেকে মুক্তি মিলবে৷

হয়তো তাদের এই ধারনা সঠিক৷ তাহলে একটা প্রশ্ন তো থাকছেই, ওই রাজনৈতিক দলের আইটি সেল এই ধরনের মহামূল্যবান পরামর্শ টুইটের মাধ্যমে কেন দিচ্ছে না উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ বা গুজরাত সরকারকে ? পরামর্শ দিতে এত ছুৎমার্গ কোন রহস্যে ?

এই ৩ রাজ্যের মানুষ করোনা’র হাত থেকে রক্ষা পান, তা কি চাইছে না ওই আইটি সেল ?

সাধারন মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে মরিয়া লড়াই চালাচ্ছে, তখন “পরামর্শ” দেওয়ার ক্ষেত্রে ওই রাজনৈতিক দলের আইটি সেলের এই দ্বিচারিতা কেন ?

এই ৩ রাজ্যের নাগরিকরা কি ‘দেশদ্রোহী’ ?

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version