বান্দ্রা ম্যাসাকারের পিছনে একটি চ্যানেলের ভুয়ো খবর, মন্ত্রীর ট্যুইটে সেই ভিডিও

মঙ্গলবারের বান্দ্রাকাণ্ড। হঠাৎ রেল স্টেশনে হাজার-হাজার মানুষের জমায়েতের পিছনে আসল রহস্য কী? পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো ঘটনা ক্রমশ প্রকাশ্য। এই অমানবিক কাণ্ডের পিছনে রয়েছে একটি মিডিয়া, বলা ভাল সর্বভারতীয় মিডিয়া। যার ভুল খবরের জেরেই আসলে কয়েক হাজার মানুষের হয়রানি। সুকৌশলে খবরের সেই উৎসটিকে চেপে গিয়ে তোপ দাগা হচ্ছে ফেসবুকে শেয়ার করা এস গুপ্তা নামে জনৈক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পরিযায়ী শ্রমিকদের উস্কানির অভিযোগে বিনয় দুবে নামে জনৈক এক শ্রমিক নেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। নেটিজেনরা বলছেন, বিনয়ের গ্রেফতারি এবং জমায়েত হওয়া প্রায় হাজারজন পরিযায়ী শ্রমিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করে আসলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, সর্বভারতীয় এই টিভি চ্যানেলের হাত একটু বেশি গভীরেই রয়েছে। তাই আসল পাণ্ডাকে না ধরে ছিঁচকে চোরকে ধরে ‘কাসভ’ বানানোর চেষ্টা অব্যাহত।

এই সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের মারাঠি চ্যানেলে (এই চ্যানেলের বাংলা চ্যানেলও রয়েছে) পয়লা বৈশাখের দুপুরে প্রথম খবরটি ব্রেক করা হয়। ব্রেক করেন সাংবাদিক রাহুল কুলকার্নি। তিনি জানান, রেলের বিভিন্ন জোনের কর্তাদের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। মূলত পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর জন্য ট্রেন চালু করার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। এই খবর প্রাথমিকভাবে প্রচার হতেই অভুক্ত, প্রায় গৃহহীন, আধপেটা খাওয়া শ্রমিকরা আশার আলো দেখেন। যোগাযোগ শুরু করেন দুবে। এর মাঝে আর একজন ফেসবুকে তুলে দিতে তা হু হু করে ছড়িয়ে পড়ে। দুবে সেখানে অনুঘটকের কাজ করেন মাত্র। ঘটনার ঘন্টা চারেকের মধ্যে তাঁরা বান্দ্রায় আশা শুরু করেন। দিশাহারা হয়ে যায় প্রশাসন। এই অভিযোগকে আরও পোক্ত করেন মহারাষ্ট্রের সংখ্যালঘু মন্ত্রী নবাব মালিক। তিনি পরিষ্কার ভাষায় জানান, বান্দ্রা স্টেশনে ওইভাবে হাজার হাজার মানুষের ভিড় করার পিছনে ওই চ্যানেলের এই ব্রেকিং খবরটি রয়েছে। শ্রমিকরা ওই খবরের উপর ভিত্তি করেই স্টেশনে ভিড় জমিয়েছিল। খবর শুনে মনে হয়েছিল তাদের বাড়ি ফেরার জন্য স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে যে আগে যাবে, তার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে। সেই সঙ্গে মালিক তাঁর ট্যুইটারেও চ্যানেলের সেই ব্রেকিং স্টোরির ভিডিও শেয়ার করেন।

 

প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা, যেখানে মহারাষ্ট্র সরকার এবং মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী বান্দ্রা ম্যাসাকারের জন্য সেই চ্যনেলটির অবিবেচক, চটুল, অত্যুৎসাহ, ভুল খবরে চ্যানেলের টিআরপি বাড়ানোর চেষ্টাকেই দায়ি করেছেন, তারপরেও কেন বিনয় দুবেদের গ্রেফতার করা হল? কেন এক হাজার জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হলো? লকডাউনের বাজারে সব শর্ত ভেঙে শ্রমিকদের রাস্তায় বের করে আনার জন্য যে চ্যানেল বা সাংবাদিক দায়ি, তাদের কেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে না! বান্দ্রায় আসা শ্রমিকদের কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হন, তার দায়িত্ব তো চ্যানেলকেই নিতে হবে। না কি, সফট টার্গেট বলেই বিনয়দের সামনে রেখে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা!!

Previous articleলকডাউন বা সোশ্যাল-ডিসট্যান্সিং- বিধি লঙ্ঘন করেই মদ কেনার ধুম
Next articleঘরবন্দি মানুষের জন্য শৈল্পিক বার্তা নিয়ে নবকল্লোলের নব প্রয়াস “Quarantine Shorts”