বাড়িতে ভালো লাগছে না: নানা ছুতোয় ব্যাঙ্কে গ্রাহক, নাজেহাল ব্যাঙ্ককর্মীরা

“পশ্চিমবঙ্গকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা কারও নেই”- স্বগতোক্তি এক হতাশ ব্যাঙ্ককর্মীর। কারণ, জিজ্ঞাসা করতে তিনি যা বললেন তাতে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়।

তাঁর মতে, ব্যাঙ্কে যাওয়াটা সাধারণ মানুষের কাছে একটা ‘মজা’ হয়ে গিয়েছে। পুলিশ ধরলেই ব্যাঙ্কের পাসবই দেখাচ্ছেন সবাই। তাঁর নিজের অভিজ্ঞতায় তিনি বললেন, “এক ভদ্রলোক এসেছেন ২০০ টাকা জমা করতে। ওনার অ্যাকাউন্টে ৫,৬২,০০০ টাকা রয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই ২০০ টাকাটা এখনই জমা করাটা কি খুব দরকার ছিল? গ্রাহক দাঁত বার করে বললেন, কী করব বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগছিল না!”
অনেক গ্রাহকই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। দু-একদিন পরে গিয়ে আবার ওই টাকাটা বা তার কিছু অংশ জমা করছেন। যাঁর একেবারে ১৫,০০০ টাকা একবারে তুলে নিলে হয়ে যায়, তিনি পাঁচদিন ব্যাঙ্কে যাচ্ছেন ওই টাকা তুলতে। ব্যাঙ্ককর্মীরা সচেতনতার বার্তা দিতে দিতে হাল ছেড়ে দিয়েছেন।
তাঁদের কথায়, “এখন সত্যি ভয় পাচ্ছি। লাঞ্চ টাইমে খেতে পারছি না ভয়ে। মনে হচ্ছে, ভালো করে হাতটা ধুয়েছিলাম তো?
বাড়ি ফিরে, কাউকে কাছে আসতে দিচ্ছি না, মনে হচ্ছে এক শরীর করোনা নিয়ে ঘরে ঢুকলাম”।
ক্ষুব্ধ ব্যাঙ্ককর্মীর কটাক্ষ, “আমরা বাঙালিরা অন্য জাতির তুলনায় অনেক বেশি অশিক্ষিত”।
হাওড়ার মন্দিরতলা এলাকায় মনে হচ্ছে না, লকডাউন চলছে। ধর্মঘট বা বনধ হলে যেরকম থাকে- এখনও চিত্রটা ঠিক সেরকম। বিকালে লোকজন মন্দিরের চাতালে, রাস্তার ধারে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। পুলিশকর্মীরাও হতাশ। এত বলার পরেও, মানুষ যদি নিজের বিপদ নিজে বুঝতে না পারে, তাহলে ওরা আর কত করবে? “যদি মৃত্যুভয় না থাকে, ঘরে বসে থাকতে ভালো না লাগে, তাহলে হাসপাতাল বা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করছে না কেন?” প্রশ্ন তুলেছেন সেই নাজেহাল- ক্ষুব্ধ ব্যাঙ্ককর্মী

Previous articleপ্যাকেজ নিয়ে প্রশ্ন, অর্থনীতিবিদরা দরিদ্র মানুষের হাতে টাকা চান
Next articleকরোনার প্রভাব এবার ওষুধ শিল্পেও