সাহস ফেরাচ্ছে কিছু মুখ, কুণাল ঘোষের কলম

কুণাল ঘোষ

কিছু ক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করতে গিয়ে ঠকে যাই।

কিছু ক্ষেত্রে লোক চিনতে ভুল করি।
কিছু ক্ষেত্রে আমার হাতে তৈরি বা উপকৃত কিছু মুখ গিরগিটিকে লজ্জা দেয়।
কিছু ক্ষেত্রে আমার তরফেও ভুল হয়ে যায়।

কিন্তু এই বয়সেই বহু স্বর্গ-নরক দেখার পর; বহু লোকের ঈর্ষার কারণ হওয়ার পর এবং বহু প্রতিকূলতার মোকাবিলার অভিজ্ঞতা অর্জনের পরে আমি বলব:

ঈশ্বরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমি এমন কিছু সহকর্মী এবং সহমর্মী পাই, যাদের সঙ্গে জীবনপথের অভিযান আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।

আমার বন্দিজীবনের কঠিনতম দিনে দেখেছি রক্তের সম্পর্ককে অনায়াসে টপকে পরমাত্মীয় হয়ে উঠেছে এই ঈশ্বরের দূতেরা, যাদের সঙ্গে হয়েছে হৃদয়ের সেতুবন্ধন।

দেখেছি এত বিতর্ক, অপবাদ, মামলার পরেও অসংখ্য মানুষ, কাছের বৃত্তের, এমনকি দূর পরিচিত; কী আস্থা, ভালোবাসা দেখান আমার প্রতি; উৎসাহ দেন লড়াইয়ের, কেউ অভিভাবকের মত আগলে রাখেন ।

এবং এখন কাজের ক্ষেত্রে একঝাঁক মুখ দেখছি।

ভ্রাতৃপ্রতিম অভিজিৎ আমার বহুযুগের সঙ্গী; দুএকজন পূর্ব পরিচিত। বাকিরা আমার বৃত্তে নতুন। বা তাদের বৃত্তে আমি নতুন।

এই চূড়ান্ত প্রতিকূল দিনে; সোনা ফলাচ্ছে এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদ। অভিজিত আর ওর টিম যা করছে, আমি নিশ্চিত, শক্তিশালী কাঠামো পেলে অনেক বড় নামের ঘুম ছুটিয়ে দিত। ওদের দেখে মুগ্ধ হচ্ছি। ওদের কিছুটা সাহায্য করতে পেরে আমি আপ্লুত। আজকের বাজারে, যখন মিডিয়াতে সংকট প্রকট; তার উপর করোনার বিপদে নাভিশ্বাস; তার মধ্যে মাত্র কয়েকজনে নাওয়াখাওয়া ভুলে এই পারফরমেন্স, অতুলনীয়। এরকম পরিবেশের কাছে থাকলে আবার শুরুর চ্যালেঞ্জিং দিনগুলো মনে পড়ে। বয়স কমে যায়। নতুন দুএকটি মুখ যা কাজ করছে, এরা সম্পদ। লম্বা দৌড়ের ঘোড়া। ভুলত্রুটি শুধরে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ডিজিটাল মিডিয়ায় নতুন ইতিহাস লিখবে এরা, মিলিয়ে নেবেন। এত চাপ নিয়েও কাজ করা যায় হাসিমুখে ! দ্রুত বাড়ছে পাঠক/দর্শকসংখ্যা। সারা পৃথিবী থেকে সাড়া। আশা করি ঈশ্বর এদের যাত্রাপথ কন্টকমুক্ত করবেন। অথবা তার চেয়েও বেশি জরুরি, কন্টকমুক্ত পথ অতিক্রম করার মানসিকতা ওদের দেবেন ঈশ্বর।

আর এই নবজাতক https://ereaders.co.in
লকডাউনেই জন্ম। উদ্দেশ্য এই ঘরবন্দি দুনিয়ায় ই-বই প্রকাশ। কেউ লিখছে। একজন অলংকরণে। কেউ তথ্য প্রযুক্তিতে। পরস্পরের দেখা নেই। মুঠোফোনে যোগাযোগ। অথচ চমকে দেওয়া বই বেরোচ্ছে পরপর। মাত্র বাইশ দিনে সাইটে হিট এক লক্ষ ত্রিশ হাজার ছাড়িয়েছে। দারুণ সাড়া। প্রমাণ হচ্ছে, লকডাউনেও ভাবা যায়। লকডাউনেও এমন কাজ করা যায়। এই অলংকরণ আর তথ্য প্রযুক্তির টিম বিস্মিত করছে। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে নতুনত্বের অভিযানে জেদ করে নেমে যে সাফল্য আনা যায়; তা দেখিয়ে দিচ্ছে।

জীবনে অনেক কিছু হারানোর পরেও এমন কিছু মুখের বৃত্তে পড়ে আবার টেবিল চাপড়ে বলার সাহসটা ফিরছে: পারি। পারি। পারি।

বাকিটা ঈশ্বর আর সময়ের বিচারাধীন।

Previous articleরক্তদান: থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছাত্রীর পাশে পুলিশ আধিকারিক
Next articleরাজ্যে তৃণমূলের নতুন নাম “রেশন চোর”! কটাক্ষ রাহুলের