কেন্দ্রের চিঠি বাংলাকে, আর ভয়াবহ অবস্থা গুজরাত, মহারাষ্ট্রের

কণাদ দাশগুপ্ত

কেন্দ্রের একের পর এক চিঠি আসছে পশ্চিমবঙ্গে৷ দফায় দফায় রাজ্যপালের চিঠি পাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৷

আর দেশবাসীর দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে গুজরাত আর
মহারাষ্ট্র৷ দেশকে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে ওই রাজ্যের সরকারি অপদার্থতা৷

ওই দুই রাজ্যে সরকারি-স্তরে বড়সড় কোনও ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, অদক্ষতা তো আছেই, নাহলে টানা লকডাউন সত্ত্বেও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গুজরাত আর মহারাষ্ট্র ক্রমশই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে কীভাবে ? পরিস্থিতি এমনই ওই দুই রাজ্যের করোনা-নিয়ন্ত্রণের ভার সরকারের হাত থেকে কেড়ে এই মুহুর্তেই সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া উচিত৷ গুজরাত আর মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ ঠেকাতে না পারলে বিপন্ন হতে পারে ১৩০কোটি মানুষের জীবন৷

করোনা’র ভরকেন্দ্র এখন গুজরাতের আমেদাবাদ এবং সেই আমেদাবাদ, যে শহরে এ বছরের ২৪ এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসেছিলেন। এই আমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামেই ‘কেম ছো ট্রাম্প’ অনুষ্ঠান করে ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
এবং সেই আমেদাবাদ, যেখানকার বস্তির দারিদ্র্য যাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নজরে না পড়ে তাই রাতারাতি বস্তির সামনে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছিলো৷ এর আগে এই আমেদাবাদেই এসেছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, চীনের শি জিনপিং এবং ইস্রায়েলের নেতানিয়াহু৷ তখন এই বস্তি আড়াল করা হয়েছিল সবুজ পর্দা দিয়ে৷ ট্রাম্পের বেলায় আর পর্দা নয়, একেবারে পাঁচিল-ই তুলে দিয়েছিলেন আমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ডাকাবুকো বিজেপি মেয়র শ্রীমতী বিজল প্যাটেল৷ এই বিজল প্যাটেল আবার অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলেই গুজরাতের রাজনীতিতে পরিচিত৷ আমেদাবাদে দু’টি লোকসভা কেন্দ্র, আমেদাবাদ-পূর্ব এবং
আমেদাবাদ-পশ্চিম৷ এই দুই কেন্দ্রের সাংসদ যথাক্রমে হাসমুখ প্যাটেল এবং কিরীট প্রেমজিভাই সোলাঙ্কি৷ এরা দু’জনই গুজরাতের বড় মাপের বিজেপি নেতা৷

সেই আমেদাবাদেই লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে৷ রেকর্ড সংক্রমণ মহারাষ্ট্রেও৷ আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহ৷
নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের রাজ্যের আমেদাবাদকে ভারতের ‘উহান’ বলা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷

গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু গুজরাতের আমেদাবাদেই করোনায় ২৯১ জনের নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে ৷ মৃত্যু হয়েছে আরও ২৫ জনের ৷ আমেদাবাদেই এখনও পর্যন্ত ৪৭৩৫টি সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে ৷ আপাতত মৃত্যু হয়েছে ২৯৮ জনের ৷

লাফিয়ে বাড়ছে মহারাষ্ট্রের করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। আক্রান্তের সংখ্যায় কোনও ভাবেই লাগাম টেনে ধরতে পারছে না শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরের সরকার৷

স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংক্রমণ মহারাষ্ট্রে ৷ নতুন করে আক্রান্ত ১২৩৩ জন ৷ মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের ৷ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬,৭৫৮ ৷ মৃতের সংখ্যা ৬৫১ ৷

দেশে করোনা- আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। এই মুহুর্তে হয়তো আরও বেড়েছে ৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২৯৫৮। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা গিয়ে ছিল ৪৯,৩৯১।

ওদিকে, মহারাষ্ট্রে ৬মে পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪১২, এর মধ্যে এদিনই মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের৷ এই রাজ্যে মোট করোনা- আক্রান্তের সংখ্যা ১২,৭৪৯, এর মধ্যে এদিনই আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৩ জন৷

Previous articleপরিযায়ীদের ঘরে ফিরতে যেভাবে আবেদন করতে হবে
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ